• বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩০

  • || ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস আজ আজ স্বৈরাচার পতন দিবস সরকার গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপমহাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে সোহরাওয়ার্দী এক উজ্জ্বল নক্ষত্র: রাষ্ট্রপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবন ও আদর্শ সবসময় সাহস জোগায়: প্রধানমন্ত্রী অবসরের তিন বছরের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তারা নির্বাচন করতে পারবে না বস্ত্র খাতের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে : রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বস্ত্রখাতের অবদান অপরিসীম : প্রধানমন্ত্রী শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন আজ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রাষ্ট্রপতি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় : প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশের বিভিন্ন স্থান আইএমও’র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ পার্বত্য শান্তি চুক্তি বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত: রাষ্ট্রপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বিশ্ব ইতিহাসে বিরল ঘটনা তরুণদের মুখোমুখি সজীব ওয়াজেদ জয় বিখ্যাত মার্কিন সাপ্তাহিক নিউজ ম্যাগাজিন নিউজউইকে শেখ হাসিনার নিবন্ধ ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য সুন্দর নির্বাচন

সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৩  

সারা দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। সরকারি হিসাবে ইতোমধ্যে দেশের ৫৭টি জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও জেলা-উপজেলায় মশক নিধন কার্যক্রম তেমন একটা নেই। এ অবস্থায় দেশজুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দেশে গত একদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ জনে। সেই সঙ্গে রেকর্ড হয়েছে এক দিনে হাসপাতালে রোগী ভর্তিতেও। এ দিন নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৬ রোগী। এ নিয়ে চলতি মাসের ৯ দিনে দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলো ৪ হাজার ৪৭৬ জন। আর এ সময় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একদিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৬ জন। এরমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৫১৬ জনকে। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৩২০ জনকে।

ঢাকায় সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী সামাল দেওয়া মুগদা হাসপাতালে সপ্তার ব্যবধানে রোগী বেড়েছে দ্বিগুণ। গত ১ জুলাই সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ৬০ জন, সেদিন চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ২৩২ জন। এক সপ্তাহ পরে সেখানে ভর্তি হয়েছে ১১১ জন আর চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৩৬।

প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার ৬০১, ৬০২ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে পুরুষ এবং অষ্টম তলার মেডিসিন ওয়ার্ডে নারী রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৭ম তলার একটি ওয়ার্ডে নারী এবং আরেকটি ওয়ার্ডে পুরুষ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ঢামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে সারাবছরই রোগীর চাপ থাকে। এরমধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে হাসপাতালে চিকাৎসা বা থাকার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হাসপাতালের ওয়ার্ডের বারান্দায় অতিরিক্ত বিছানা করা হয়েছে। অনেকেই বিছানা না পেয়ে ফ্লোরিং করছেন।

ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিভাগে এখন রোগী যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মৃত্যু। এরপরই বা তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ।

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় যশোর সদর ও অভয়নগরকে ডেঙ্গুর ‘রেডজোন’ ঘোষণা করেছে উপজেলাকে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলায় লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ৯ দিনে জেলায় মোট ৮০ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।

জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক বলেন, দ্রুত গতিতে যশোরে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। জেলার সদর উপজেলা এবং অভয়নগর উপজেলাকে ‘রেডজোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নিয়েছি।

তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে। সরকার একা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। যার যার বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। যেখানে মশা জন্ম নেয় সেখানে স্প্রে করে লার্ভা ধ্বংস করতে হবে।’

গতকাল দুপুরে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে ডেঙ্গুতে প্রায় ১২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে আড়াই হাজার রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ৯ হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। চিকিৎসক ও নার্সদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার ৬০ ভাগই ঢাকায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি আছেন। আমরা ডেঙ্গু মোকাবিলা করে চলেছি। আমরা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে আহ্বান করব তারা যেন বেশি বেশি মশা নির্মূলে স্প্রে করে। এখন বৃষ্টি হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা পানিতে মশা জন্ম নিচ্ছে, লার্ভা হচ্ছে।’

সরকারি হিসাবে ৫৭ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়লেও সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়া জেলা-উপজেলা শহর ও গ্রামে মশকনিধন কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়ছে না। সিটি করপোরেশন এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চললেও জনবল ও যন্ত্রপাতির অনেক ঘাটতি রয়েছে। তবে পৌর এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই নাজুক। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মশক নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যক্রমই নেই। কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া সব ইউনিয়ন পরিষদই মশা নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র, ওষুধ ও জনবলশূন্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় নয়, ইউনিয়ন পর্যায়েও মশক নিয়ন্ত্রণে সক্রিয়তা প্রয়োজন।

মশক বিশেষজ্ঞ ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনেরই তো প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নেই। তাহলে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নে কীভাবে থাকবে। পৌরসভাগুলোতে দু-একটি ফগার মেশিন আছে। তাদের রুটিনমতো কাজ করার কোনো লোক নেই। উপজেলা পর্যায়ে তো কোনো কিছুই নেই।’