• রোববার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ৯ ১৪৩০

  • || ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বিশ্বের ৩৫তম অর্থনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ চুরি করা অর্থ দিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী বিএনপি কি আসলেই নির্বাচন চায়, তাদের নেতা কে: প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের জন্য সমুদ্রগুলো যেন সমৃদ্ধির উৎস হয়ে থাকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে বাংলাদেশ পুতুলের রাজনীতিতে আসার বিষয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, জনগণ সঠিকভাবে ভোট দেবে: শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণই তাদের ‘স্যাংশন’ দিয়ে দেবে: প্রধানমন্ত্রী কোরআন পোড়ানো নিয়ে শেখ হাসিনার নিন্দা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলে বাংলাদেশও নিষেধাজ্ঞা দেবে: প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ছাড়া দেশকে কিছুই দিতে পারেনি বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায় ভিয়েতনাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই বাংলাদেশের অগ্রাধিকার: উজরা জেয়াকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী যারা স্যাংশন দিয়েছে তাদের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আছে: প্রধানমন্ত্রী সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী মানুষ ও নেতা শেখ হাসিনা যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে ঐক্যের ডাক প্রধানমন্ত্রীর

অবশেষে সরছে পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৩  

কিছু দিন পরপরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শিরোনামে আসে পুরান ঢাকা। এ এলাকার অবৈধ রাসায়নিকের গুদাম ও প্লাস্টিকের কারখানায় লাগা আগুনে গত ১৩ বছরে ঝরেছে অন্তত ৩০০ প্রাণ। এসব অবৈধ রাসায়নিকের গুদাম সরাতে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার তা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এতে স্বস্তি এসেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে। যদিও নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, ব্যবসায়ীদের উৎসাহী করে তোলা না গেলে এ উদ্যোগও ভেস্তে যেতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরান ঢাকার এসব গুদাম সরিয়ে স্থানান্তর করতে ইতোমধ্যে টঙ্গীতে এবং শ্যামপুরে দুটি অস্থায়ী গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। এসব স্থানে কোনও ঝামেলা ছাড়াই ব্যবসায়ীরা ভাড়া দিয়ে সরাসরি ব্যবসা করতে পারবেন। এ ছাড়া মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ৩১০ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা ‘বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল পার্ক’ প্রকল্পের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। যেখানে সরকার শুধু জমি দেবে। আর ব্যবসায়ীরা সেই জমিতে নিজেদের মতো স্থাপনা করে নিতে পারবেন।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর হতে জরিপ কাজ শুরু করে সংস্থাটি। সে সময় দক্ষিণ সিটির কর অঞ্চল ৩, ৪ ও ৫ এ অনুসন্ধান চালিয়ে ১ হাজার ৯২৪টি কেমিক্যাল গোডাউনের তথ্য পায় ডিএসসিসি। সে তালিকায় কেমিক্যালের ধরন এবং ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ গুদামের সংখ্যা এবং এসব গুদামে রাখা রাসায়নিক দ্রব্যাদির নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘চুড়িহাট্টার দুর্ঘটনার পর থেকে আমরা কিন্তু সম্পূর্ণরূপে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এই নিয়ে আমি শিল্পমন্ত্রীর সাথে, বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে সভা করেছি। এখন স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এলাকাবাসীর মনে স্বস্তি এসেছে। আমি চাই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এমনভাবে যেন কিছু করা না হয়, যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।’

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সরকার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) মাধ্যমে বৈধ কেমিক্যাল কারখানা এবং কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের জন্য মুন্সিগঞ্জে ‘বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল পার্ক’ প্রকল্পের কাজ করছে। যা এখন শেষ পর্যায়ে। তার আগে বিদ্যমান বৈধ ব্যবসায়ীদের বিপজ্জনক কেমিক্যাল কারখানা সাময়িকভাবে সংরক্ষণের জন্য বিসিআইসির আওতায় ঢাকার শ্যামপুরে উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে ৫৪টি গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া গুদাম সংশ্লিষ্টদের জন্য দুইটি অফিস ভবন নির্মাণ, বিসিআইসির জন্য একটি অফিস ভবন ও মসজিদ তৈরি, ১ লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতার একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পানির ট্যাংক নির্মাণ, দুইটি ইটিপি স্থাপন, ৯টি ফায়ার হাইড্রেন্টসহ স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা স্থাপন, ৩০টি সিসি ক্যামেরা ও অনলাইন মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন, এক লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ওভারহেড পানির ট্যাংক, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন-ট্রান্সফরমার-জেনারেটর, রাস্তা, ড্রেন ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বিসিআইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে রাসায়নিক দ্রব্যাদি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করা এবং পুরান ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত রাসায়নিক পদার্থসমূহ দ্রুত স্থানান্তর ও নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করা। তবে ৩১০ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা ‘বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল পার্ক’ প্রকল্পের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্লট বরাদ্দের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই পল্লী নির্মাণ হলেই সেখানে এসব স্থানান্তর করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক মো. লিয়াকত আলী বলেন, “পুরান ঢাকা থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে নিতে ইছামতি নদীর তীরে ‘বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল পার্ক’ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ দিকে। সেটি চলমান হলে এই এলাকার সব রাসায়নিক সেখানে স্থানান্তর করা হবে।”

এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিলেও ব্যবসায়ীরা যদি সেখানে যেতে না চায় তাহলে এ উদ্যোগও ভেস্তে যেতে পারে। নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে হলেও ঢাকার জনবহুল এলাকা থেকে এসব রাসায়নিক সরিয়ে নেওয়া আশাব্যঞ্জক। তবে এখানে ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে। তাদেরকে যদি পর্যাপ্ত সহযোগিতার মাধ্যমে স্থানান্তরের বিষয়ে উৎসাহী করা না যায় তবে এসব উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না।