• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
আধুনিক প্রযুক্তির মেট্রোরেল যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, দেশবাসীকেই বিচার করতে হবে মেট্রো স্টেশন যেভাবে ধ্বংস করেছে, মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াত সহিংস করেছে: জয় নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের ছাড় না দেয়ার দাবি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের ধারণা ছিল একটা আঘাত আসবে: প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ২১ জুলাই স্পেন যাবেন প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচারই পাবে: প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে হবে : প্রধানমন্ত্রী পবিত্র আশুরা মুসলিম উম্মার জন্য তাৎপর্যময় ও শোকের দিন আশুরার মর্মবাণী ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান মুসলিম সম্প্রদায়ের উচিত গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী দুঃখ লাগছে, রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ ‘চীন কিছু দেয়নি, ভারতের সঙ্গে গোলামি চুক্তি’ বলা মানসিক অসুস্থতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে না দেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী : প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার

অর্থপাচারের নেপথ্যে সহস্রাধিক অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৩  

সম্প্রতি বাজারে মুদ্রা অস্থিতিশীলতা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থপাচার এবং অধিক মুনাফার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ‘কৃত্রিম সংকট’ তৈরি করে আসছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। যার প্রভাব পড়েছে দেশের সব সেক্টরে। এসবের পেছনে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের যেমন ভূমিকা ছিল, তেমনই কিছু বৈধ মানি এক্সচেঞ্জের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চারদিকে ব্যাঙের ছাতার মতো নামে-বেনামে এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনও কোনোটি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে কেনাবেচা করে আসছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি বলছে, সম্প্রতি বিদেশে অর্থপাচার, দেশের অর্থসংকটের পেছনে অনেকটাই দায়ী এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ২৩৫টি। তবে এর বাইরে অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যবসা করছে আরও এক হাজারেরও বেশি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। যারা সারা দেশে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ঘুরে ঘুরে ফোনে ফোনেই অবৈধভাবে বেচাকেনা করছে দেশি-বিদেশি মুদ্রা।

প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিচালিত অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের নেপথ্যে যারাই থাকুক, তাদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, বলছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

ডলারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় সিআইডি ইতোমধ্যে বেশ কিছু অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর পাঁচটি স্থানে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ অফিস গুলশানের জেএমসিএইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জ, বাকি দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। মোট পাঁচ প্রতিষ্ঠানের অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

এদের গ্রেফতারের পর বুধবার (১৮ জানুয়ারি) মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। মাসে ২২ বা ২৪ কর্মদিবসে আরও কি পরিমাণ তারা ক্রয়বিক্রয় করেছেন তা ধারণা করা যায়।

তিনি বলেন, ‘তাদের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা আমাদের অপারেশনাল কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো। আমাদের অভিযানের কারণে অনেক অবৈধ প্রতিষ্ঠান অফিস গুটিয়ে কাঁধে-ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে ঘুরে ঘুরে ফোনে ফোনে যোগাযোগ করে ব্যবসা করছে। যার যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দরকার সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। বিনিময়ে ডলার বা অন্য বিদেশি মুদ্রার ন্যায্য মূল্যের তুলনায় বেশি টাকা নিচ্ছে।

অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ গজিয়ে ওঠার সংখ্যা বাড়ছে; যা এখন হাজারের ওপরে। এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকের জ্ঞাতসারেই হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান মোহাম্মাদ আলী মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। তবে আমাদের দেশের স্বার্থে কষ্ট করতে হবে। আমার মতে, দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে কোন অবৈধ পথ বেছে নেওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য যেকোনও ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তা যদি হুন্ডি কিংবা অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে জড়ানোর তথ্য মেলে তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

কেন অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ বাড়ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে লাভবান হওয়া যায়, তাই অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সোর্স ও আমাদের নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে আমরা অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযান করছি। মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু সিআইডি নয়, সব এজেন্সি মিলেই কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে আলাদা আইন আছে; সে অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। অবৈধ মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ। কিন্তু তারা টাকা বা ডলার পাচার করেছেন কিনা, তারা হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘অল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি আয়ের আশায় অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জগুলো তৈরি হচ্ছে। অভিযানে অবৈধ পাঁচটি মানি এক্সচেঞ্জের মধ্যে তিনটির অফিস থাকলেও বাকি দুটো প্রতারণামূলক বা ফেরারি। তারা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মানি এক্সচেঞ্জ করতেন।’

এ প্রসঙ্গে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান অনলাইনে বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে তাদের লেনদেন করে থাকে। দেশে ও দেশের বাইরে থেকে এসব লেনদেন হয়। বর্তমান সময়ে দেশে অর্থপাচার এবং অর্থ সংকটের পেছনে এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানও দায়ী। এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে আমাদের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, এ অভিযান সামনেও অব্যাহত থাকবে।’