• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পদ্মা সেতুর পর আরেক চমক আসছে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২  

বর্তমান সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সমুদ্র তলদেশ দিয়ে প্রথম প্রতিষ্ঠা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। স্বপ্নের এ টানেল নির্মাণ কাজের আর মাত্র অবশিষ্ট রয়েছে ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ ৮৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি টানেলের উভয়প্রান্তে এ্যাপ্রোচ রোডের কাজও ৮৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতুর পর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিতব্য টানেলই হবে আরেক চমক।

নির্মাণাধীন টানেলে বর্তমানে উচ্চ ঝুঁকির তিনটি ক্রস প্যাসেজের মধ্যে একটির কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অপর দুটির কাজ এগিয়ে চলেছে। টানেল অভ্যন্তরে ভেন্টিলেশন, কমিউনিকেশন সিস্টেমসহ অন্যান্য কাজে ৮ শতাধিক মেটেরিয়াল চীনের সাংহাই থেকে আসছে। সাংহাইতে করোনার কারণে গত মার্চ থেকে টানেলের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম আনা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর পরও টার্গেট অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ পর্যায়ে টানেল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, টানেল অভ্যন্তরে দুই টিউবের প্রথমটির লেনস্ল্যাব স্থাপন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দ্বিতীয় টিউবে অনুরূপ লেনস্ল্যাব স্থাপন কাজ ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম টিউবে পেভমেন্ট স্থাপন কাজ এগিয়ে চলেছে। এরপর দ্বিতীয় টিউবে অনুরূপ পেভমেন্ট স্থাপন করা হবে।

প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গেছে, টানেলে উপরোক্ত কাজের পাশাপাশি ইলেকট্রোনটিক্যাল কাজের তৎপরতা চলছে। সাংহাই থেকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অনুষঙ্গ আসতে বিলম্ব হলেও অন্যান্য কাজ এগিয়ে নিয়েছে চীনের কর্মরত প্রায় আড়াইশ’ কর্মী। তাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন বাংলাদেশী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মীবাহিনী।

সূত্র জানিয়েছে, এ প্রকল্পে যাবতীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ হয়ে আসছে চীন থেকে। চীনে করোনার ধাক্কা সাংহাইসহ বিভিন্ন শহরে আঘাত করার কারণে টানেলের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হলেও তা বর্তমানে কাটিয়ে উঠেছে। টানেলের দুটি টিউব প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হয়েছে বহু আগে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কারিগরি কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু টানেলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও চীনের একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন্স কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ দেয়ার ব্যাপারে গত ১৮ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটারের এ টানেলের রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের জন্য সিসিসিসিকে নিযুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে জলোচ্ছ্বাসে কোনভাবে টানেল অভ্যন্তরে সমুদ্রের নোনাপানি যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়টি চউকের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। চউক সূত্র জানিয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার একটি রিং রোড নির্মিত হয়েছে, যার সঙ্গে টানেলের সম্পৃক্ততা থাকছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে নির্মিত হয়েছে সিটি আউটার রিং রোড। টানেলের দক্ষিণ প্রান্তেও ঘূর্ণিঝড় বা উচ্চমাত্রার জলোচ্ছ্বাসের পানি যাতে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। 

সূত্র আরও জানিয়েছে, টানেলের পুরকৌশল বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে। শুরু থেকে এ কাজ এগিয়েছে সুষ্ঠুভাবে। টানেল নির্মাণ কাজ শুরুর পর দুই বছরের বেশি সময় করোনার সংক্রমণ থাকলেও এতে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। টানেল নির্মাণ কাজে চীনা এবং বাংলাদেশী বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা যথাযথ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নির্মাণযজ্ঞ এগিয়ে নিয়েছে। যার ফলে সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষদিকে টানেল উদ্বোধনের যে টার্গেট দিয়েছে সে অনুযায়ী সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারিত আছে। মূলত টানেলের খনন কাজের পর দুই টিউবের অভ্যন্তরে একটির সঙ্গে আরেকটির মাঝখানে ক্রসপ্যাসেজ থাকবে তিনটি। এসব ক্রস প্যাসেজ নির্মাণ কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ কাজও এগিয়ে চলেছে সফলতার সঙ্গে। যার কারণে প্রথমটির কাজ ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 

উল্লেখ্য, দুই টিউব সংবলিত মূল টানেল হবে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে। এর মধ্যে টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের উদ্বোধন করেছিলেন। এর আগে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ টানেল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। টানেল নির্মাণে সব সেগমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে চীনের জিন জিয়াং প্রদেশে।