• সোমবার   ২৭ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ১৩ ১৪২৯

  • || ০৪ রমজান ১৪৪৪

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বাইরে নালিশ করা, কান্নাকাটি করা বিএনপির চরিত্র: শেখ হাসিনা স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছায় বাইডেন বললেন ‘জয় বাংলা’ ‘জিয়াউর রহমান নির্বিচারে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছেন’ অস্বাভাবিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে কিছু লোকের কদর বাড়ে: প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা ও হ্যান্ডলিং করতে চায় জাপান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের ঋণ কখনো শোধ হবে না: প্রধানমন্ত্রী পাক হানাদাররা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা স্বাধীনতা দিবসে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে সরকার আমরা যুদ্ধ-সংঘাত চাই না: প্রধানমন্ত্রী গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে ২৫ মার্চ ১৯৭১: রক্ত আর আর্তচিৎকারের ভয়াল রাত যে কোনো অর্জনেই ত্যাগ স্বীকার করতে হয়: প্রধানমন্ত্রী গুণীজনদের হাতে স্বাধীনতা পদক তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে প্লেন চলাচলের কেন্দ্রে পরিণত করতে রোডম্যাপ জরুরি জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে

রফতানিতে আলো দেখাচ্ছে অপ্রচলিত বাজার

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩  

বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও ঈর্ষণীয়ভাবে বেড়েছে পোশাক রফতানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বমন্দায় ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা পণ্য কেনা কমিয়ে দিলেও আলো হয়ে দাঁড়ায় অপ্রচলিত বাজার। ১৭টি নতুন দেশে অন্তত চার হাজার মিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি হয়েছে, গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে।

রফতানিকারকরা বলছেন, প্রচলিত বাজার তথা ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে নতুন বাজারগুলো থেকে বাড়তি অর্ডার আসায় সার্বিকভাবে রফতানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। আর এই পোশাক রফতানির ওপর ভর করে দেশের অর্থনীতিও জোর কদমে এগিয়ে চলেছে।

পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন, আগে কারখানায় ইউরোপ-আমেরিকান বায়ারদের পণ্য তৈরি হতো। ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট শুরুর পর অর্ডার কমে যায়। তবে ২০২২ সালে ভারত-জাপান কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো অপ্রচলিত বাজারে রফতানি করে ভালো আয় পাচ্ছেন তারা।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সর্বশেষ যে পূর্বাভাস দিয়েছে, সেখানেও ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ভালো অর্থনীতির দেশের তালিকায় সবার ওপরে রেখেছে বাংলাদেশকে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও পাকিস্তানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে হবে ২ শতাংশ; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। ভুটানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ দশমিক ১ শতাংশ, নেপালে ৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ নেগেটিভ (মাইনাস) প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

সংস্থাটি মনে করে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হবে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

সর্বোচ্চ রফতানি আয় ডিসেম্বরে
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে তৈরি পোশাক পণ্যের দাম ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রফতানি আয়ের নতুন রেকর্ড অর্জনে সহায়তা করেছে তৈরি পোশাক খাত। একই সঙ্গে তা নভেম্বরে হওয়া রেকর্ডকেও ভেঙেছে। ডিসেম্বরে ৯ শতাংশের কিছু বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে রফতানি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা একক মাসের হিসাবে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।

পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যের পোশাক অপেক্ষাকৃত বেশি হারে রফতানি হওয়া এবং চীনসহ প্রধান প্রতিযোগীদের তুলনায় বড় বাজারগুলো থেকে বেশি হারে রফতানি আদেশ পাওয়া ডিসেম্বরে রেকর্ড রফতানির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী বছরে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে ৪৫ হাজার ৭০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৩৫ হাজার ৮১১ মিলিয়ন ডলার। শুধু নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে আয় ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে ১২ হাজার ৬৬০ মিলিয়ন ডলার নিটওয়্যার এবং ১০ হাজার ৩৪০ ডলারের ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রফতানি খাতে এখন পর্যন্ত একক আধিপত্য ধরে রেখেছে তৈরি পোশাক খাত।

পরিসংখ্যান যা বলছে
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।

বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‌‘যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের প্রধান রফতানি বাজারগুলোর দিকে লক্ষ করি, তাহলে দেখতে পাই জার্মানিতে আমাদের রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে স্পেন এবং ফ্রান্সে আমাদের রফতানি যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৩৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার এবং ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।’

অন্যদিকে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে পোল্যান্ডে আমাদের রফতানি ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের তৈরি পোশাক রফতানি ২০২২-২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে ৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যার প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়েরে তুলনায় মাত্র ১ দশমিক ১১ শতাংশ। একই সময়ে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রফতানি যথাক্রমে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার এবং ৭৭৪ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।’

বিজিএমইএর পরিচালক বলেন, ‘প্রচলিত বাজারগুলো ছাড়াও অপ্রচলিত বাজারে আমাদের পোশাক রফতানি আগের বছরের একই সময়ের মধ্যে ৩২ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপানে রফতানি ৪২ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৭৫৪ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ভারতেও আমাদের রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে ৫০ শতাংশ বেড়েছে, যার পরিমাণ ৫৪৮ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার।’

পরিসংখ্যানে প্রধান দেশগুলোতে তৈরি পোশাক রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও চলতি অর্থবছরের আগের মাসগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে আগামী মাসে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।

বিজিএমইএর সংকলন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পোশাকের অপ্রচলিত বাজার আটটি। ভারত, রাশিয়া, জাপানসহ বাজারগুলোর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা।