• বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ||

  • অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩০

  • || ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস আজ আজ স্বৈরাচার পতন দিবস সরকার গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপমহাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে সোহরাওয়ার্দী এক উজ্জ্বল নক্ষত্র: রাষ্ট্রপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবন ও আদর্শ সবসময় সাহস জোগায়: প্রধানমন্ত্রী অবসরের তিন বছরের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তারা নির্বাচন করতে পারবে না বস্ত্র খাতের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে : রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বস্ত্রখাতের অবদান অপরিসীম : প্রধানমন্ত্রী শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন আজ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় : রাষ্ট্রপতি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় : প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশের বিভিন্ন স্থান আইএমও’র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ পার্বত্য শান্তি চুক্তি বিশ্বে একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত: রাষ্ট্রপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বিশ্ব ইতিহাসে বিরল ঘটনা তরুণদের মুখোমুখি সজীব ওয়াজেদ জয় বিখ্যাত মার্কিন সাপ্তাহিক নিউজ ম্যাগাজিন নিউজউইকে শেখ হাসিনার নিবন্ধ ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য সুন্দর নির্বাচন বঙ্গবন্ধু টানেলে ৩০ দিনে টোল আদায় ৪ কোটি টাকা

শুরু হচ্ছে জ্বালানি তেল খালাসের নতুন যুগ

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

 সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর একটি গভীর সমুদ্রে ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্প। মহেশখালীর ১৯১ একর জমির ওপর নির্মিত প্রকল্পটির কাজ এরই মধ্যে ৯৭ ভাগ শেষ হয়েছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে পরীক্ষামূলক সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হলেও ত্রুটিজনিত কারণে এর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। সম্প্রতি যোগাযোগ করা হলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থা ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) কর্তৃপক্ষ  জানান, চলতি সেপ্টেম্বরেই ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতের কাজ শেষ করবে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। সেক্ষেত্রে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল খালাস শুরু করা সম্ভব হবে। আর ডিসেম্বর থেকে পুরোদমে শুরু হবে তেল খালাসের কাজ।

ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, পাইপলাইনে যে ত্রুটি ছিল তা মেরামতে বাংলাদেশের কোনো আর্থিক ক্ষতি হয়নি। এর দায়ভার প্রকল্পের ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানের। আশা করা হচ্ছে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পাইপলাইন মেরামতের কাজ শেষ হবে। সেক্ষেত্রে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসপিএম প্রকল্পের টেস্ট কমিশনিং শুরু হবে এবং ডিসেম্বর থেকে এটি পুরোদমে তেল খালাসের কাজ শুরু করবে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসপিএম প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ আমদানি করা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিবহন এবং সঞ্চালনের নতুন ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমদানি করা ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট দ্রুত ও স্বল্প খরচে নিরাপদে খালাস করতে সাগরের বুকে বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশাল এ প্রকল্প। ডাবল পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু হলে সরকারের বার্ষিক সাশ্রয় হবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গভীর সমুদ্রে নোঙর করা বড় জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল খালাসে আর লাইটার জাহাজের প্রয়োজন হবে না। পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় খালাস হবে ১ লাখ ২০ হাজার টন তেল, যা আগে খালাসে সময় লাগত ১২ দিন। এর ফলে সারা দেশে জ্বালানি তেল সরবরাহেও গতি বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে জ্বালানি তেলের মজুদক্ষমতা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জি টু জি ভিত্তিতে এসপিএম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লি. এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএলএফ কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ারস, জার্মানি নিয়োজিত। চায়না এক্সিম ব্যাংক প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা দিচ্ছে। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের নভেম্বরে। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় ৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে এসপিএম নির্মিত হচ্ছে। অপরিশোধিত তেল পরিশোধনেরে জন্য এসপিএম প্রকল্প থেকে ইআরএল পর্যন্ত একটি ১২০ কিমি. পাইপলাইন তৈরি করা হয়েছে। এর ৪৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল সংরক্ষণের ক্ষমতা আছে। প্রকল্পের কাজের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ১৩৫ কিমি. অফশোর পাইপলাইন ও ৫৮ কিমি. অনশোর পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসপিএম প্রকল্পটি মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পাশে সাগরে স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে জাহাজ থেকে তেল সরাসরি পাম্প করা হবে, যা এসপিএম হয়ে অফশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মাতারবাড়ীর যেখানে ল্যান্ড টার্মিনাল শেষ হয়েছে সেখানে পৌঁছাবে। পরে সেখান থেকে অনশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালী এলাকায় নির্মিতব্য স্টোরেজ ট্যাংকে জমা হবে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পৃথক পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোড করা হবে। ট্যাংক থেকে পাম্পিংয়ের মাধ্যমে তেল প্রথমে অনশোর ও পরে অফশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের গহিরা ল্যান্ড টার্মিনালের শেষ পর্যন্ত আসবে। সেখান থেকে পুনরায় অনশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে কর্ণফুলী ইপিজেডের ভিতর দিয়ে ডাঙারচর পর্যন্ত এসে কর্ণফুলী নদী এইচডিডি পদ্ধতিতে অতিক্রম করে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ভিতর দিয়ে ইআরএলে পাঠানো হবে। ট্যাংক ফার্ম থেকে ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পৃথক পাইপলাইনের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হবে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এসপিএম প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী এলাকায় স্টোরেজ ট্যাংক ও পাম্পিং ট্যাংক স্থাপন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ক্রুড অয়েলের (প্রতিটির নেট ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার ঘন মিটার) এবং তিনটি ডিজেল ট্যাংক (প্রতিটির নেট ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার ঘনমিটার)। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)-এর মাদার ভ্যাসেল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল দ্রুত বহন করার জন্য এসপিএম প্রকল্প শুরু করেছে। এর ফলে বার্ষিক ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে এটি বাস্তবায়িত হলে দেশে আধুনিক তেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। বিপিসি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং কর্ণফুলী নদী চ্যানেলের নাব্য কম হওয়ায় তেলবাহী বড় জাহাজগুলো সরাসরি জেটিতে এসে খালাস করা সম্ভব নয়। এসব জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করে ছোট লাইটারেজের মাধ্যমে তেল খালাস করে। এতে ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার তেলবাহী জাহাজ খালাসে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন।