• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের

হারিয়ে যাচ্ছে গিফট কার্ডের আবেদন

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

প্রিয়জনকে মনের কথা বলতে বা শুভেচ্ছা জানাতে এক সময় গিফট কার্ড ছিল অন্যতম এক মাধ্যম। ভালোবাসা দিবসে তো কয়েকগুণ বেড়ে যেত এর চাহিদা। এছাড়া জন্মদিন, ঈদ, নববর্ষের মতো বিশেষ দিনগুলোতেও আবেগ প্রকাশের জন্য এ মাধ্যমটির চাহিদা থাকতো তুঙ্গে। তবে সেসব যেন এখন ঠাঁই নিয়েছে শুধুই স্মৃতির পাতায়। এক সময়ের জনপ্রিয় এ উপহার সামগ্রীটির আবেদন এখন আর নেই বললেই চলে।

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বিশেষ এ দিনটিকে ঘিরে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গিফটের দোকানগুলোতে ছিল ক্রেতাদের ভিড়। সরেজমিনে বিভিন্ন শপিংমল ও বিপণী বিতান ঘুরে দেখা যায়, প্রিয়জনকে খুশি করতে বিভিন্ন ধরনের উপহার কিনছেন ক্রেতারা। তবে তাদের চাহিদার একেবারেই তলানিতে ছিল গিফট কার্ড।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে প্রচলন কমেছে গিফট কার্ডের। বেশিরভাগ মানুষই এখন মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানায়। পছন্দের মানুষকে মনের কথা বলতে ব্যবহার করা হয় হোয়াটস অ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারের মতো আধুনিক প্রযুক্তি। এমনকি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের অনেকে গিফট কার্ড দেওয়ার যে সংস্কৃতি, সেটি সম্পর্কে জানেই না। তাই দিন দিন জৌলুস কমছে গিফট কার্ডের, হারাচ্ছে আবেদন।

উপহার কেনার জন্য ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে যেসব দোকান থাকে, তার একটি আর্চিজ গ্যালারি। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জিগাতলার সীমান্ত স্কয়ারের আর্চিজ গ্যালারির শো-রুমে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই দোকানে। ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জন বা পছন্দের মানুষকে উপহার দিতে কেউ কিনছেন পুতুল, কেউ শো-পিস, কেউবা ঘড়ি। দোকানটির ঠিক মাঝ বরাবর অসংখ্য গিফট কার্ড সাজিয়ে রাখা হলেও সেদিকে আগ্রহ নেই বেশিরভাগ ক্রেতার। অনেক ক্রেতা সাজিয়ে রাখা কার্ডগুলো নাড়িয়ে চাড়িয়ে দেখলেও কিনছেন হাতে গোনা দুই-একজন।

আর্চিজ গ্যালারির এ শো-রুমটির সত্ত্বাধিকারী মো. কামাল জানান, আগে তাদের দোকানে প্রতিদিন ১০টি গিফট কার্ড বিক্রি হলে, এখন হয় একটি। কোনো কোনো দিন তাও হয় না। আগে ভালোবাসা দিবসের আগের দিন অন্তত ৫০টি বেশি গিফট কার্ড বিক্রি হতো। আর আজকে (সোমবার) বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০টি।

তিনি বলেন, আগের মতো গিফট কার্ডের চাহিদা নেই। বিশেষ দিনে সবাই ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপেই প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানায়। তাই বিক্রি কম। বিক্রি কমায় আমরাও এ উপহার সামগ্রীটির আমদানি কমিয়েছি। আগে ভারতের দিল্লি থেকে প্রতি লটে আর্চিজ গ্যালারির জন্য ২০০ থেকে ৩০০ কার্টুন গিফট কার্ড আমদানি করা হতো। এখন করা হয় মাত্র ৫০ থেকে ৬০ কার্টুন।

আর্চিজ গ্যালারিতে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত গিফট কার্ড পাওয়া যায় বলে জানান মো. কামাল।

এ দোকানেই ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে প্রিয়জনের জন্য গিফট কার্ড ও উপহার কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, এখন মানুষ অস্থির, তাদের গিফট কার্ড কেনা ও দেওয়া সময় নেই। ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেই প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দায় সারেন তারা। কিন্তু গিফট কার্ডের মধ্যে যে একটা লাভিং, টাচিং ব্যাপার আছে সেটা তারা বুঝেন না। এছাড়া চাহিদা না থাকায় বিক্রেতারাও নতুন কার্ড আনেন না। যার কারণে কার্ডে এখন আর আগের মতো ভিন্নতা পাওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, আগে হাতে হাতে মোবাইল ছিল না। তাই গিফট কার্ডই ছিল প্রিয়জনকে উপহার বা শুভেচ্ছা জানানোর অন্যতম মাধ্যম। এখন দুনিয়া আধুনিক হয়েছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি এসেছে। যার কারণে গিফট কার্ডের আবেদনও হারিয়ে গেছে। তবে এ সংস্কৃতিটা ধরে রাখা দরকার।  

উপহার সামগ্রী বিক্রির আরেকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলমার্ক। এ ব্র্যান্ডের বসুন্ধরা শপিং মল শাখার স্বত্বাধিকারী মো. রিংকু বলেন, আগে ভালোবাসা দিবসে কার্ড কেনার হিড়িক পড়ে যেত। আর এখন এর ক্রেতাই নেই। মূলত ৯০ দশকের মানুষরাই এ উপহারটির ক্রেতা ছিল। এখনকার নতুন প্রজন্মের কাছে এর তেমন কোনো আবেদন নেই। তারপরও কিছু মানুষ গিফট কার্ডের জন্য আসেন। তাদের জন্যই আমরা গিফট কার্ড রাখি।

একই কথা বললেন আড়ংয়ের বসুন্ধরা শাখার বিক্রয়কর্মী মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, চাহিদা নেই বলে আমাদের এখনে কার্ডের সংখ্যা অনেক কম। এখন মানুষ গিফট কার্ডের মাধ্যমে খুব একটা শুভেচ্ছা জানান না। চাহিদা না থাকায় আমাদের গিফট কার্ডের উৎপাদনও কম। মানুষ এখন গিফট কার্ডের পরিবর্তে প্রিয়জনকে গিফট ভাউচার দেন। আমাদের এখানে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত গিফট ভাউচার পাওয়া যায়। যা দিয়ে পরবর্তীতে আমাদের যে কোনো শো-রুম থেকে যেকোনো পণ্য কেনা যাবে।

হলমার্কের বসুন্ধরা শাখায় গিফট কার্ড কিনতে এসেছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মী নাঈমা। তিনি বলেন, আমাদের যুগে গিফট কার্ডই ছিল প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর একমাত্র মাধ্যম। কারও জন্মদিন শুভেচ্ছা জানাতে গিফট কার্ড কিনতাম। ঈদে একে অন্যকে গিফট কার্ড দিতাম। প্রিয় মানুষকে ভালোবাসার কথা বলতেও গিফট কার্ডই ছিল মাধ্যম। এখনকার জেনারেশন এটি বোঝে না। তারা এখন ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা পাঠায়। আমরা ৯০ এর দশকের যারা, তাদের কাছে এখনও গিফট কার্ডের আবেদন ফুরায়নি। তাইতো ভালোবাসা দিবসে প্রিয় মানুষকে উপহারের সঙ্গে শুভেচ্ছা জানাতে গিফট কার্ড কিনেছি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হাসান নিটোল বলেন, একটা সময় শুভেচ্ছা কার্ড দেওয়ার প্রচলন থাকলেও এখন প্রযুক্তির আধুনিকতায় তা হারাতে বসেছে। তবে এর আবেদন এখনও আগের মতোই বিদ্যমান।