• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লাইলাতুল কদর মানবজাতির অত্যন্ত বরকত ও পুণ্যময় রজনি শবে কদর রজনিতে দেশ ও মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা প্রধানমন্ত্রীর সেবা দিলে ভবিষ্যতে ভোট নিয়ে চিন্তা থাকবে না জনপ্রতিনিধিদের জনসেবায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভোটের চিন্তা থাকবে না দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রেসিডেন্টকে শেখ হাসিনার চিঠি রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আহ্বান

খেজুরের কাঁচা রস অনিরাপদ, বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে: আইইডিসিআর

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩  

খেজুর গাছ থেকে কাঁচা রস সংগ্রহে যত সতর্কতাই অবলম্বন করা হোক না কেন, তা অনিরাপদ বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরিন।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা মানুষের মধ্যে আবারও খেজুরের কাঁচা রস পানের প্রবণতা লক্ষ্য করছি। সেটি আবার তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটা করে প্রচারও করছেন। এটি (রস পান) যে কী ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে, তা না জেনেই মানুষ খেজুরের কাঁচা রস পান করছেন। আমরা সবাইকে খেজুরের কাঁচা রস পান করতে নিষেধ করছি। কারণ রস সংগ্রহে যত সতর্কতাই অবলম্বন করা হয়ে থাকুক না কেন, এটি অনিরাপদ।’ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন।

jagonews24

এদিকে, নবজাতক সন্তান মায়ের কাছ থেকে নিপাহ ভাইরাসের হিউমোরাল অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পায় বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি)।

সংস্থাটি বলছে, প্রথমবারের মতো নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তির থেকে অন্য জনের দেহে সম্ভাব্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রবাহের নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি-এর বিজ্ঞানী ও সহযোগীদের এ নতুন গবেষণার ফল ট্রপিকেল মেডিসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যানুযায়ী, নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার আনুমানিক ৪০-৭৫ শতাংশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৭১ শতাংশ। এছাড়া নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার পরও গুরুতর স্নায়ুবিক জটিলতার শঙ্কা রয়েছে। গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এ জটিলতা আরও খারাপ হতে পারে।

আইসিডিডিআর,বি জানায়, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে নিপাহ ভাইরাসে ফরিদপুরে পাঁচ বছরের কম বয়সী একটি কন্যাশিশু ও তার মা সংক্রমিত হন। তারা দুজনই খেজুরের কাঁচা রস পান করেছিল। পরে শিশুটি মারা যায়। তার মা গুরুতর স্নায়ুবিক জটিলতার শিকার হন। ২০২১ সালের নভেম্বরে ওই নারী আবার গর্ভধারণ করেন। তিনি সন্তানপ্রসবের আগে জাতীয় নিপাহ সার্ভেইল্যান্স কর্তৃপক্ষের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সেবা পেয়েছেন। ২০২১ সালের আগস্টে তিনি একটি সুস্থ ছেলে শিশুর জন্ম দেন।

সংস্থাটি আরও জানায়, নবজাতকের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং ভাটিকেল ট্রান্সমিশন বা মায়ের থেকে থেকে শিশুতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাদ দেওয়ার জন্য রেফারেন্স ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছিল। যদিও পরীক্ষা করে র‌্যাপিড ও পিসিআর টেস্টে নিপাহ সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু অ্যান্টিনিপাহ আইজিজির একটি উচ্চ টাইটার দেখতে পাওয়া যায়। এভাবেই প্রথমবারের মতো নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মায়ের থেকে সন্তানের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসের হিউমোরাল অ্যান্টিবডি পৌঁছে।

Nipah-virus_Bangla.jpg

এ গবেষণাদলের প্রধান গবেষক আইসিডিডিআর,বি-এর ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের অন্তর্গত ইমার্জিং ইনফেকশন্স শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ও ডেপুটি প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মইনুদ্দীন সাত্তার বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, এ গবেষণাই প্রথম নিপাহ ভাইরাসভিত্তিক ইমিউন প্রোপার্টিজের ভাটিকেল ট্রান্সফার বা মা থেকে শিশুতে পরিবাহিত হওয়ার প্রমাণ নিশ্চিত করে। ভাইরাস নিউট্রিলাইজেশনের কার্যকারিতা এবং নবজাতকের সুরক্ষার সম্ভাব্যতার বিষয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। এটি নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে গর্ভবতী ও কমবয়সী নারীদের জন্য টিকা তৈরির ক্ষেত্রে একটি রেফারেন্স হিসেবেও কাজ করবে বলে আমরা আশাবাদী।’

আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ জাতীয় নিপাহ সার্ভেইল্যান্সের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, আইসিডিডিআর,বি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্তকরণ, রোগের সংক্রমণের ধরণ ও মারাত্মক সংক্রমণের বিরুদ্ধে থেরাপিউটিকস এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে নতুন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহে বিশ্বের দীর্ঘতম নিপাহ ভাইরাস সার্ভেইল্যান্স পরিচালনা করছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সফল প্রচেষ্টা। আমি আশা করি, শিগগির নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসা বের করতে পারবো, যা অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবে।’

নিপাহ ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস অর্থাৎ এটি প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এটি দূষিত খাদ্য অথবা সরাসরি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। টেরোপাস জেনাসের ফলখেকো বাদুড় এ ভাইরাসের প্রাকৃতিক ধারক। বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম এমারজিং মহামারি সৃষ্টিকারী রোগের মধ্যে একটি।

বাংলাদেশে ২০০১ সালে প্রথম এ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তখন থেকে এ জনবহুল দেশে প্রায় প্রতি বছরই অনেক মানুষ মারা যায়। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৩১ জন মানুষ নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ২৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।