• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের

রমজানে কি বন্ধ হবে ইসরাইলি নিপীড়ন

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩  

প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। আটক-গ্রেফতারের পাশাপাশি গুলি চালিয়ে হত্যা করছে ইসরাইলি বাহিনী। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর।

গত বছর অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩০ শিশুসহ ১৭০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। চলতি বছরও সেই রক্তপাত অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আড়াই মাসে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে অন্তত ৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান সহিংসতায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি  নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যেই মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ২৩ মার্চ ফিলিস্তিনেও শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। ইসরাইলি অত্যাচার ও নিপীড়নে ক্লান্ত-শ্রান্ত, নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের অনেকের প্রশ্ন: পবিত্র এই সংযমের মাস উপলক্ষে কি ইসরাইলি বাহিনী ও সেটেলারদের নির্যাতন-নিপীড়ন হবে?
আগের বছরগুলোতে রমজানে মাঝে মাঝেই ইসরাইলি পুলিশ ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা গেছে। বিশেষ করে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের চারপাশে এই সংঘর্ষ দেখা দেয়। এটি ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সম্মানজনক স্থান। এ বছর রমজান ইহুদি ধর্মের পাসওভার এবং খ্রিষ্টানদের ইস্টারের সঙ্গে একই সময়ে পড়েছে।

রমজানে যাতে ইসরাইলের এই নিপীড়ন কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা যায়, কয়েক দিন ধরেই সেই চেষ্টা করছিলেন ফিলিস্তিনি নেতারা। কূটনৈতিক চেষ্টা-তদবিরের মাধ্যমে অবশেষে গত ১৯ মার্চ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠকে বসতে সক্ষম হয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)।

মিশর ও জর্ডানের মধ্যস্থতায় দেশটির লোহিত সাগরের তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন ও জর্ডানের প্রতিনিধিরাও। বৈঠকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনসহ বৈঠকে উপস্থিত সব পক্ষই  রমজানের ছুটির মৌসুমে উত্তেজনা কমাতে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে জর্ডানের আকাবা বন্দরে অনুষ্ঠিত আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মেনে চলার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে।

রোববারের শীর্ষ বৈঠকের পর মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে সহিংসতা ও উত্তেজনা হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ বৈঠকের লক্ষ্য একতরফা কার্যক্রম ও উত্তেজনা বন্ধ করা এবং চলমান সহিংসতার চক্র ভেঙে শান্তি অর্জনে কাজ করে যাওয়া।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এ বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, ইসরাইল যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়, প্রায়ই সেগুলো প্রতীকী হিসেবে হাজির হয়। যেমন, দেশটির সরকার বারবার বসতি স্থাপন বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও সম্প্রতি হাজার হাজার নতুন বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে।

মধ্যস্থতাকারীদের লক্ষ্য ছিল, পবিত্র রমজানের আগে আগে উত্তেজনা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা, যা এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আগামী মাসে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদরে উৎসব পাসওভার উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ছুটির সময়টিকে নিরাপদ নিশ্চিত করাও তাদের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে যদিও গত রোববারের শীর্ষ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করেননি। তবে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা হুসেইন আল শেখ এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘মিশরে বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের বিরুদ্ধে এই ক্রমাগত ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করা।’

এসব প্রতিশ্রুতি কতটা নির্ভরযোগ্য?

গত ১৯ মার্চের বৈঠকটি ছিল চলতি বছরের দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জর্ডানের আকাবায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম শীর্ষ বৈঠকটি। জর্ডানের মধ্যস্থতায় ওই বৈঠকেও উভয় পক্ষই সহিংসতা কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে।

কিন্তু বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরই সব প্রতিশ্রুতি ভেস্তে যায়। এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী পশ্চিম তীরে দুই ইসরাইলিকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় আবারও শুরু হয় সহিংসতা।

আল জাজিরার প্রতিবেদনমতে, প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে সেনা প্রহরায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় ইসরাইলি সেটেলাররা (অবৈধ বসতি স্থাপনকারী)। একাধিক গ্রামের বহু ঘরবাড়ি ও গ্যারেজ জ্বালিয়ে দেয়া হয়। বাসিন্দাদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। ছুরি ও রড দিয়ে হামলা চালানো হয়। সব মিলিয়ে অন্তত ৩০০টি হামলা চালানো হয়।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তারা জানান, নাবলুসের দক্ষিণে হুয়ারা, জাতারা, বুরিন ও আসিরা আল-কিবলিয়া–এই চার গ্রামে তাণ্ডব চালায় ইসরাইলি সেটেলাররা। হামলায় অন্তত ১ জন নিহত ও ৩৯০ জন আহত হন। বেশির ভাগই সেনাবাহিনীর ছোড়া টিয়ারগ্যাসে আহত হন।

ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, রড ও পাথর দিয়ে হামলার পাশাপাশি ছুরি হামলাও চালানো হয়। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, একজনকে পাথর দিয়ে মাথার খুলি ভেঙে দেয়া হয়।

তারপর থেকে মাঝে মাঝেই ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গুপ্তহত্যা মিশন ও সেনা অভিযান চলছে। থেমে নেই ফিলিস্তিনিরাও। সুযোগ বুঝে তারাও প্রতিরোধ অভিযান চালাচ্ছে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শান্তির আশা নিয়ে গত রোববার আবারও বৈঠকে বসে উভয় পক্ষ।

কিন্তু শারম আল-শেখের ওই বৈঠকের বিস্তারিত সামনে আসতে না আসতেই আবারও শুরু হয় গোলাগুলি। নাবলুসের হুয়ারায় ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে দুই ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী আহত হযন। এরপর মঙ্গলবারই (২১ মার্চ) ইসরাইলি পার্লামেন্টে ২০০৫ সালের একটি আইন সংশোধন করা হয়।

যার মাধ্যমে অধিকৃত পশ্চিম তীরের চারটি বসতিতে ইহুদিদের ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। ওই আইনবলে তাদের ওই বসতিগুলো খালি করার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছিল। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিন্দা জানানোর পরও এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

রমজানের প্রথম দিনই ফিলিস্তিনি হত্যা ইসরাইলি বাহিনীর

ইসরাইল ও ফিলিস্তিন শীর্ষ বৈঠকের চার দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শুরু হয় সংযম চর্চার মাস পবিত্র মাহে রমজান। রোজার প্রথম দিনই অধিকৃত পশ্চিম তীরে অভিযান চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় একজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে তারা। এ সংবাদ নিশ্চিত করেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।

ইসরাইলি সীমান্ত পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ভোরে বেশ কয়েকটি গোলাগুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে আবু খাদিজেহ নামে এক ফিলিস্তিনি যুবককে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালায় গোপন ইউনিট। সীমান্ত পুলিশ আরও জানায়, ওই যুবক যে বাড়িতে ছিলেন, ইউনিটটি সেটি ঘিরে ফেলে এবং ওই যুবক তাদের দিকে অস্ত্র তাক করলে তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তুলকারেম শহরে আমির আবু খাদিজেহকে (২৫) মাথায় গুলি করা হয়েছে। ইসরাইলের দখলদারিত্ব মোকাবিলা করার জন্য তুলকারেম ব্রিগেড নামে নতুন একটি দল বলেছে, আবু খাদিজেহ দলটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তারা তার মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।