• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

তারাবি নিয়ে বিতর্ক কেন!

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৩  

নামাজ, রোজা, হজ, ওমরা, পাক-পবিত্র হওয়া ইত্যাদির পদ্ধতি কুরআন থেকে আসেনি, এসেছে সুন্নাহ থেকে।

তারাবি নিয়ে ঝগড়া বন্ধ করি! ঠান্ডা মাথায় লেখাটি পড়ি।

মুসলিম ইতিহাসের প্রায় ১৩০০ বছরে তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে কোনো বিতর্ক ছিল না। এ বিতর্ক শুরু হয় গত শতাব্দীতে...।

তাহাজ্জুদের নামাজের যে ফজিলত, তারাবিরও একই ফজিলত। তবে রমজান মাসে রাতের নামাজ তথা তারাবির বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রাতে নামাজ পড়ে, আল্লাহ তার পূর্বের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেবেন।” [সহিহ বুখারি: ৩৭]

এখন আসুন, আমরা জানবো কীভাবে তারাবির নামাজের প্রচলন হয়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জীবনের শেষ রমজানে একদিন রাতে মসজিদে যান। একা একা তারাবির নামাজ পড়েন। তিনি কাউকে নামাজ পড়তেও বলেননি। কিন্তু সাহাবিরা তার দেখাদেখি নামাজ পড়েন। পরের রাতে দেখা গেলো সাহাবিদের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। চতুর্থ রাতে মসজিদে তিল ধারণের জায়গা ছিল না, কিন্তু সেদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে গেলেন না।

ফজরের নামাজ পড়ে তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের বললেন, “শোনো, আমি জানতাম তোমরা সারারাত ধরে এখানে আছো, কিন্তু আমি আসিনি। কিন্তু, আমি এই নামাজ তোমাদের ওপর ‘ফরজ’ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি (বিধায় বের হইনি)। আর তোমরা তা আদায় করতে অপারগ হয়ে পড়তে পারো।” [সহিহ বুখারি: ২০১২]

এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করেন এবং তারাবির বিষয়টি অমীমাংসিত থাকে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময়েও বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। 

উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময়ে প্রথম বছরে তারাবি নিয়ে কোনো কথা উঠেনি। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের দ্বিতীয় বছর রমজানে তিনি মসজিদে প্রবেশ করে দেখেন মুসল্লিরা এলোমেলোভাবে নামাজ পড়ছেন। কেউ একা একা নামাজ পড়ছেন, কেউ ছোট ছোট জামাতে নামাজ পড়ছেন। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু চাইলেন, সবাই এভাবে এলোমেলো না হয়ে যদি একজন ইমামের পেছনে নামাজ পড়তেন।

তখন উবাই ইবনে কাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তারাবির নামাজ পড়ানোর জন্য নিযুক্ত করেন। সবাই এক জামাতে তারাবির নামাজ পড়া শুরু করেন। দৃশ্যটি দেখে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “কতই না সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা!” [সহিহ বুখারি: ২০১০]

ইতিহাসের বইগুলোতে লিপিবদ্ধ আছে, উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু পুরুষদের তারাবির নামাজের জন্য দুজন ইমাম নিযুক্ত করেন এবং নারীদের নামাজের জন্য আরেকজন ইমাম নিযুক্ত করেন। প্রথমদিকে তারাবির নামাজ আট রাকাত পড়া হতো, সঙ্গে তিন রাকাত বিতর। সবমিলিয়ে ১১ রাকাত। কিন্তু, তার খিলাফতের শেষদিকে তিনি আট রাকাতকে বাড়িয়ে ২০ রাকাত করেন। তিন রাকাত বিতরসহ মোট ২৩ রাকাত। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক:২৪৪]

উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কেন ২০ রাকাতের প্রচলন করেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেন আন্দালুসের বিখ্যাত মালেকী মাজহাবের স্কলার আল-বাজী রাহিমাহুল্লাহ। তিনি বলেন, “উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এটা মানুষের জন্য সহজ করার জন্য করেন। কারণ, আট রাকাত নামাজ এত লম্বা হতো যে, মানুষের পায়ে ব্যথা হতো। দাঁড়িয়ে অনেক্ষণ থাকতে হতো। এজন্য তিনি আট রাকাত থেকে ২০ রাকাত করেন।”

মানুষজন তখন আরেকটা জিনিসের প্রচলন করে। প্রতি চার রাকাত পর তারা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার নামাজ শুরু করতো। এটার ভিত্তি কী? হাদিসে আছে। আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাতের নামাজের বিবরণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বর্ণনা করেন, “তিনি চার রাকাত পড়তেন, তারপর বিশ্রাম নিতেন। অতঃপর আবার চার রাকাত পড়তেন। তুমি জিজ্ঞেস করো না তার নামাজ কতটা সুন্দর ছিল!” [সহিহ বুখারি: ২০১৩]

উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময় এই হাদিসের ওপর ভিত্তি করে তারাবির নামাজের মাঝখানে বিশ্রাম নেয়া হতো, এটাকে আরবিতে বলে ‘তারউইহা’। এই তারউইহা থেকে তারাবি এসেছে, যার মানে হলো অনেকগুলো বিশ্রাম। বিখ্যাত হানাফি ফকিহ ইমাম আল-সারাখসী তার বিখ্যাত বই ‘আল-মাবসুত’ এ বলেন, ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ তারাবি শব্দের উৎপত্তির কথা বলতে গিয়ে এই যুক্তির কথা বলেন। অর্থাৎ, বিশ্রাম নেয়া।

উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু কেন ২০ রাকাতের প্রচলন করেন এটার কারণ জানা যায়নি। খিলাফতের রাজধানী মদিনায় তখন ২০ রাকাত তারাবি হয়, মক্কায়ও তখন ২০ রাকাত হয়। এমনকি বর্তমান সময়েও মক্কা-মদিনায় ২০ রাকাত তারাবি প্রচলিত। কয়েক বছরের মধ্যে মক্কায় তখন আরেকটি কাজের প্রচলন দেখা দেয়। মক্কার লোকেরা চার রাকাতের মধ্যের ব্রেকে তারা তাওয়াফ করা শুরু করেন। অনেকেই বলতে পারেন, এত কম সময়ের মধ্যে তাওয়াফ করা কীভাবে সম্ভব? এর উত্তরে বলবো, তখন এত জনসমাগম ছিল না, হৈ-হুল্লোড়ও ছিল না। কম সময়ের মধ্যে তাওয়াফ করা যেত। আমি (ইয়াসির ক্বাদি) ছাত্রাবস্থায় নিজেও অনেক তাওয়াফ করেছি, যেগুলোতে সময় লেগেছে ১১ মিনিটের মতো কিংবা তারচেয়েও কম।

মক্কার লোকেরা পড়ত ২০ রাকাত তারাবি, পাশাপাশি করতে পারতো তাওয়াফ। এ খবরটি যখন মদিনার লোকেরা জানতে পারলো, তারা তখন চিন্তা করলো আমরা তো তাওয়াফ করতে পারবো না! তারা ২০ রাকাতের সঙ্গে আরো ১৬ রাকাত তারাবি পড়া শুরু করলো। সবমিলিয়ে ৩৬ রাকাত তারাবি (তিন রাকাত বিতর মিলিয়ে ৩৯ রাকাত)। এটা ছিল তাবেঈ, তাবে-তাবেঈদের যুগে।

ইমাম জাফরানী ইমাম আশ-শাফে’ঈ  রাহিমাহুল্লাহকে তারাবির রাকাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ইমাম শাফে’ঈ বলেন, “আমি মদিনার লোকদেরকে ৩৯ (৩৬+৩) রাকাত পড়তে দেখেছি এবং মক্কার লোকদেরকে ২৩ (২০+৩) রাকাত। তুমি এই দুটো মতের যেকোনো একটা ফলো করতে পারো, কোনো অসুবিধা নেই।”

দেখুন, ইমাম আশ-শাফে’ঈ বলছেন, মক্কার লোকেরা ২৩ রাকাত পড়ে, মদিনার লোকেরা ৩৯ রাকাত, তুমি যেকোনো একটা অনুসরণ করলেই হবে। এই মতটি ইসলামের ইতিহাসে ছিল সবচেয়ে উত্তম মত। অর্থাৎ, একটা পড়লেই হলো।

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর আযাদকৃত দাস না’ফে রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “মদিনার মানুষকে আমি ৩৯ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তে দেখেছি, যার মধ্যে ৩ রাকাত বিতর নামাজ অন্তর্ভুক্ত।”

অনেকেই অবাক হতে পারেন, এই ৩৯ রাকাত কোথা থেকে এলো? এটা সাহাবি/তাবেঈদের সময় থেকেই চলে আসছে। মদিনার গভর্নর ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহকে তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা কমানোর জন্য বললে ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ প্রতি উত্তরে বলেন:
“আমি মানুষজনকে এটার ওপর আমল করতে দেখেছি এবং এটি পূর্ববর্তীদের আমল।” ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ, যিনি জন্মগ্রহণ করেন ৯৩ হিজরিতে, তিনি বলছেন ‘পূর্ববর্তীদের আমল’; যিনি নিজেও ছিলেন একজন পূর্ববর্তী। তাহলে তার পূর্ববর্তী কারা? সাহাবি, তাবে’ঈ।
পূর্ববর্তী আলেমরা আলোচনা করতেন তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়া ‘উত্তম’ এটা নিয়ে। বেশিরভাগ বলতেন বিশের পক্ষে (২০+৩)। কারণ, এটার ওপর সাহাবিদের ইজমা ছিল। উমর ইবনুল খাত্তাবের আমল থেকে এটা প্রচলিত।

যেকোনো নফল নামাজের ক্ষেত্রে সংখ্যাগত কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটা এমন নয় যে ২০ রাকাতই পড়তে হবে, ৩৯ রাকাতই পড়তে হবে। নফল নামাজের ক্ষেত্রে যত বেশি পারবেন পড়বেন। কোনো কারণে পড়তে অপারগ হলে যতটুকু পারেন পড়ুন। কিন্তু, আমরা এসব বাদ দিয়ে নফল নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করি!

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! তারাবি আট না ২০ রাকাত এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। আমার জানামতে ইসলামের ১৩০০ বছরের ইতিহাসে এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা ছিল না। এটা নিয়ে প্রথম ঝামেলা শুরু হয় গত শতাব্দীতে! এটা একটি আধুনিক বিতর্ক ফেতনাও বলা চলে । গত শতাব্দীর একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস, খুব দক্ষ আলেম রাহিমাহুল্লাহ, প্রথমবারের মতো দাবি করলেন- ২০ রাকাত তারাবি হলো বিদাত! এর আগে আমার জানামতে কেউ এমন দাবি করেননি।

আমার শিক্ষক শায়খ ইবনে উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “যে বলে আট রাকাতের বেশি তারাবি পড়া বিদাত, সে নিজেই আসলে বিদাত বলছে। কারণ, এর আগে কোনো আলেম এটাকে বিদাত বলেননি।”

তারাবির নামাজ কোনো সংখ্যাগত বিষয় বা কোয়ান্টিটি নয়, এটা হলো কোয়ালিটি। এটা ফরজও নয় যে কমালে বাড়ালে ক্ষতি হবে। এটা নফল নামাজ। আপনি আপনার ইচ্ছেমতো আট রাকাত পড়ুন, ২০ রাকাত পড়ুন কিংবা ৩৬ রাকাত।

আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারাবছর রাতে দীর্ঘ সময় নিয়ে নামাজ পড়তেন। তিনি রাতে পড়তেন আট রাকাত। কিন্তু, তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়ে যাননি- আট রাকাত পড়তেই হবে।

এমনকি একবার একজন সাহাবি এসে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি রাতের নামাজ কীভাবে আদায় করবো?” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করবে। আর যদি আশঙ্কা করো ফজরের সময় হয়ে যাচ্ছে, তখন বিতর পড়া শুরু করবে।” [সহিহ বুখারি: ৪৭২]

এ মতটিই ছিল দীর্ঘ ১৩০০ বছর ধরে মুসলিম উম্মাহর মত। এই ১৩০০ বছরে কেউ কখনো বলেনি- ২০ রাকাত তারাবি পড়া বিদাত। সুতরাং, আপনাকে কেউ এসে যদি বলে, “তুমি ২০ রাকাত পড়ছো কেন? তুমি কি জানো না ২০ রাকাত পড়া বিদাত?” তাহলে আপনি জবাবে বলবেন, “জাজাকাল্লাহু খাইরান। আপনি আট রাকাত পড়ুন, আমি ২০ রাকাত পড়ি।” এটা নিয়ে ঝগড়া করার কোনো দরকার নেই।
[লেখাটি শায়খ ইয়াসির ক্বাদির লেকচার থেকে অনূদিত।]