• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর জুলাইয়ে ব্রাজিল সফর করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নাগরিক গড়তে প্রশংসনীয় কাজ করেছে স্কাউটস: প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্কাউট আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী লাইলাতুল কদর মানবজাতির অত্যন্ত বরকত ও পুণ্যময় রজনি শবে কদর রজনিতে দেশ ও মুসলিম জাহানের কল্যাণ কামনা প্রধানমন্ত্রীর সেবা দিলে ভবিষ্যতে ভোট নিয়ে চিন্তা থাকবে না জনপ্রতিনিধিদের জনসেবায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পারলে ভোটের চিন্তা থাকবে না দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রেসিডেন্টকে শেখ হাসিনার চিঠি রূপপুরে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আহ্বান

জবাব দিতে হবে প্রতিটি কাজ ও কথার

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

জবাবদিহিতা সুযোগের দ্বার অবারিত করে। ‘আমাকে জবাবদিহি করতে হবে’- এই অনুভূতি মানুষকে অসংখ্য ভুলের পথ থেকে রক্ষা করে।

সেই প্রেক্ষাপটে সে অসংখ্য অপরাধ প্রবণতা থেকে বেঁচে থাকার দুর্লভ সুযোগ লাভে ধন্য হয়। পক্ষান্তরে, যার জবাবদিহিতা নেই, তার ভুলভ্রান্তি দোষ-ত্রুটি উন্মোচনের সুযোগ নেই; সে জন্য এগুলো থেকে মুক্তিলাভের সুযোগ নেই। যার জবাবদিহিতার অনুভূতি নেই, দোষত্রুটি ও অপরাধ প্রবণতায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হওয়াটা তার জন্য একেবারেই স্বাভাবিক।

সে জন্য ভুলত্রুটি ও পাপ-পঙ্কিলতামুক্ত একজন মানুষ তৈরিতে জবাবদিহিতার বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। প্রতিটি মানুষই সমাজের সদস্য। পাপমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে প্রতিটি সদস্যের ভূমিকা থাকাটাই স্বাভাবিক। সে জন্য জবাবদিহিতার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ ভুলভ্রান্তি ও দোষত্রুটিমুক্ত হয়ে গড়ে উঠলে পাপমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ মোটেও কঠিন নয়; বরং এ ধরনের একটি সুষমা সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য এই জবাবদিহিতার কোনো বিকল্প নেই। একে বাদ দিয়ে সুস্থ সমাজ কল্পনাই করা যায় না।

ইসলাম জবাবদিহিতার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করে তুলেছে, মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাকে কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এগুলোর প্রত্যেকটির জন্য জবাবদিহি করতে হবে।’

আল-কোরআনের অন্যত্র আল্লাহ বলেন-
الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ

অর্থ : আজ আমি তাদের মুখের ওপরে মোহর মেরে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে আর তাদের পাগুলো দুনিয়ায় কী কী করেছিল তার সাক্ষ্য দেবে।’ (সূরা ইয়াসিন : আয়াত নম্বর ৬৫)।

হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. কত সুন্দরই না বলেছেন ‘হিসাব প্রদানের আগেই নিজে নিজের হিসাব কষে দেখ।’ সব বিষয়েই জবাবদিহি করতে হবে। বিশেষভাবে কোনো কোনো বিষয় জবাবদিহি করতে হবে, সে সম্পর্কেও হাদিসে আলোকপাত করা হয়েছে। যেমন বলা হচ্ছে : হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন বনি আদমকে তার রবের কাছ থেকে দুই পা-কে একবিন্দু পর্যন্ত সরাতে দেয়া হবে না, যতক্ষণ না তাকে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তার বয়স সম্পর্কে, সে কোথায় তা ধ্বংস করেছে; তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কোথায় সে তাকে পুরাতন করেছে; তার সম্পদ সম্পর্কে, সে কোন জায়গা থেকে তা উপার্জন করেছে আর কোন জায়গায় তা খরচ করেছে এবং তাকে যে বিদ্যা-বুদ্ধি দান করা হয়েছিল সে অনুযায়ী সে কী আমল করেছে। (তিরমিজি)।

আজ আমাদের পুরো সমাজ পাপ-পঙ্কিলতায় জরাজীর্ণ। চুরি, ডাকাতি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, জবরদখল, ঘুষ, দুর্নীতি, খিয়ানতসহ অসংখ্য অপরাধে আজ মানুষ শ্বাসরুদ্ধপ্রায়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব অপরাধীর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যাও কম নয়!, মানুষ কোনো না কোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই দায়িত্বশীল। কেউ সন্তান-সন্ততির প্রতি দায়িত্বশীল; কেউবা সমাজ, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, জেলা পর্যায়ে দায়িত্বশীল। যে যাদের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত তাকে তাদের সম্পর্কে জবাবদিহি করাটাও কিন্তু পার্থিব নিয়মে গড়ে-ওঠা সমাজ ব্যবস্থারও অংশ। বাস্তবে এই জবাবদিহির কতটুকু বলবৎ রয়েছে সে কথা ভিন্ন। ইসলাম কিন্তু অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে এ জবাবদিহির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সবাই রাখাল, আর যাদের ওপর তোমরা রাখালির দায়িত্ব পালন করছ তাদের সম্পর্কে তোমাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। (বুখারি ও মুসলিম)।

আখেরাতের অনিবার্য জবাবদিহিতাকে কোনো নির্বোধ যদি উপেক্ষাও করে সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতাকে মনেপ্রাণে লালন করে, তাহলেও যে কোনো কুকর্ম করতে তার পিছপা হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জবাবদিহিতামূলক বিধি-ব্যবস্থার প্রচলন থাকাও বাঞ্ছনীয়। সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের প্রতিটি স্তরের প্রতিটি লোক সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে; এমনি ধরনের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ছাড়া পাপমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ কখনো সম্ভব নয়। জবাবদিহিমুক্ত সমাজ মানুষকে আইনের প্রতি অসম্মান দেখাতে প্ররোচিত করে। দায়িত্বরোধ জাগ্রত হওয়ার দ্বার রুদ্ধ করে। অন্যের সম্পদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপের পথ উন্মুক্ত করে। অভদ্র আচরণ করতে শেখায়।

এক কথায় যত অপকর্ম রয়েছে সব করতে উদ্ধুদ্ধ করে। জবাবদিহিতা পাপমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের জন্য একেবারেই অনিবার্য। আমরা সমাজের প্রতিটি স্তরে যত জবাবদিহিতার চর্চা করতে পারব ততই সমাজ পাপমুক্ত হবে, অপরাধ থেকে পরিত্রাণ পাবে। আল্লাহ আমাদের এ কাজে সহায় হন। আমিন।