• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নামাজে মনোযোগ ধরে রাখার উপায়

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২১  

নামাজে খুশু-খুজু বা মনোযোগ বলতে অন্তর ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্থিরতাকে বোঝায়। অর্থাৎ নামাজে অনর্থক নড়াচড়া না করা এবং অন্তরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর কল্পনা উপস্থিত না রাখা। খুশু-খুজু হচ্ছে নামাজের প্রাণ। পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে ‘ইকামাতে সালাত’ তথা নামাজ কায়েমের নির্দেশ রয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে নামাজকে তার যাবতীয় হকসহ আদায় করা। রুকু-সেজদা পূর্ণরূপে আদায় করা, কোরআন তেলাওয়াত সুন্দরভাবে করা এবং খুশু-খুজুর সঙ্গে নামাজ পড়া। (তাফসিরে তাবারি)

কোরআন-হাদিসে নামাজের যে অশেষ কল্যাণ ও উপকারিতার কথা বিবৃত হয়েছে তা খুশু-খুজুসম্পন্ন নামাজের দ্বারাই অর্জিত হতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘সেসব মুমিন সফলকাম, যারা নামাজে খুশু অবলম্বন করে।’ (সুরা মুমিন : ১-২)। রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘নামাজি ব্যক্তি যতক্ষণ নামাজের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন। আর নামাজ থেকে অন্য দিকে ভ্রুক্ষেপ করলে আল্লাহও তার দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন।’ (আবু দাউদ)।

খুশু-খুজুবিহীন নামাজ নিষ্প্রাণ দেহের মতো। আল্লাহর কাছে এমন নামাজের মূল্য নেই। বরং এ ধরনের নামাজ নামাজির চেহারায় ছুড়ে মারা হয়। নবীজি (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে, ধীর-স্থিরভাবে নামাজে দাঁড়ায়, রুকু-সেজদা শান্তভাবে আদায় করে, একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ পড়ে সে নামাজ উজ্জ্বল ও আলোকিত হয়ে ওপরে চলে যায় এবং নামাজির জন্য এভাবে দোয়া করে। আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করুন যেভাবে তুমি আমাকে হেফাজত করেছ। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি মন্দভাবে নামাজ আদায় করে সে নামাজ কালো কুৎসিত হয়ে যায়। আর নামাজিকে এভাবে বদদোয়া দেয়। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন যেরূপ তুমি আমাকে ধ্বংস করেছ। তারপর সে নামাজকে পুরনো কাপড়ে পেঁচিয়ে চেহারায় নিক্ষেপ করা হয়।’ (তাবরানি)

কোরআন এবং হাদিসে খুশু-খুজুর সঙ্গে নামাজ আদায়ের অত্যধিক তাগিদের কারণে অনেক ইমাম ফতোয়া দিয়েছেন, খুশু-খুজুবিহীন নামাজ প্রকৃতপক্ষে নামাজই নয়। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘মানুষের মাঝে এমন এক সময় আসবে, যখন মানুষ বাহ্যিকভাবে নামাজ আদায় করবে। তবে প্রকৃতপক্ষে নামাজ আদায় করবে না।’ (ইমাম আহমদ (রহ.) রচিত রিসালাতুস সালাহ)। নামাজের বাহ্যিক দিক হলো, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে নামাজ আদায় করা। আর অন্তভ্যরীণ দিক হলো, এমনভাবে নামাজ পড়া যেন আল্লাহকে দেখছি নতুবা আল্লাহ আমাকে দেখছেন। বস্তুত এমন নামাজই মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত : ৪৫)

বর্তমানে অনেক নামাজ আদায়কারীকে প্রকাশ্যে অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে দেখা যায়। হজরত ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘যার নামাজ তাকে অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে বিরত না রাখে সে নামাজ তাকে আল্লাহ থেকে আরও দূরে সরিয়ে দেয়।’ (মুজামুল কাবির : ১১০২৫)। শাহ ওয়ালি উল্লাহ দেহলভি (র.) লিখেছেন, ‘নামাজের মূল উপাদান তিনটি।  

১. নামাজে আল্লাহ পাকের অনন্ত অসীম মহত্ত, বড়ত্ব ও ক্ষমতার চিন্তায় বিভোর থাকা। 
২. আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ত্ব উত্তম শব্দমালার দ্বারা জবানে প্রকাশ করা। 
৩. দাঁড়ানো, বসা, রুকু, সেজদার মাধ্যমে নিজের অক্ষমতা, অপারগতা, দাসত্বের সাক্ষ্য প্রদান করা।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা : ১/৭২)

নামাজে শয়তান বিভিন্ন চিন্তা ও কল্পনার উদ্রেক করে। ফলে নামাজি ব্যক্তি হারিয়ে যায় কল্পজগতে। আর তার নামাজ হয় নির্জীব ও নিষ্প্রাণ। সুতরাং নামাজের মধ্যে একাগ্রতা সৃষ্টির একটি উপায় হলো মুখে উচ্চারিত শব্দের প্রতি মনোযোগ দেয়া। অর্থাৎ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নামাজ শুরু করা থেকে সালাম ফেরানো পর্যন্ত প্রত্যেক অবস্থায় যা পড়া হয় সে সবের প্রতি ধ্যান করা। এরপর নামাজে পঠিত সুরা ও দোয়াসমূহের অর্থের প্রতি মনোযোগী হওয়া।

আর নিজেকে আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান মনে করা। আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্তের কথা চিন্তা করা। মুজাদ্দিদে আলফে সানি (র.) তার মাকতুবাতে লিখেছেন, ‘নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় সেজদার স্থানে, রুকু অবস্থায় পায়ের ওপর, সেজদা অবস্থায় নাকের ওপর এবং বসা অবস্থায় হাতের ওপর দৃষ্টি রাখলে নামাজে একাগ্রতা সৃষ্টি হয়।’হজরত শাকিক বলখিকে (র.) জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কীভাবে নামাজ পড়েন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘প্রথমে উত্তমরূপে অজু করি, তারপর ধীরস্থিরভাবে নামাজে দাঁড়াই। মনে মনে ভাবি, কাবা আমার সম্মুখে, পা আমার পুলসিরাতের ওপর, ডান দিকে বেহেশত, বাঁ দিকে জাহান্নাম, আজরাইল (আ.) আমার মাথার ওপর এবং মনে করি, এটাই আমার জীবনের শেষ নামাজ। হয়তো জীবনে আর নামাজ পড়ার সুযোগ হবে না।’এভাবে সর্বান্তঃকরণে আল্লাহ তায়ালার মহিমা জাগ্রত রেখে নামাজে দণ্ডায়মান হলে আমাদের নামাজ হবে জীবন্ত ও শক্তিশালী। এমন নামাজ আমার ইহকালে ও পরকালে বয়ে আনবে পরম প্রাপ্তি।