• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী

১৯ এপ্রিল ১৯৭১

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ নির্দেশনা

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২১  

বাংলাদেশ সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সরকারের আদেশ মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানান।

নির্দেশাবলী:
১. কোনো বাঙালি কর্মচারী শত্রুপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করবে না। প্রতিটি কর্মচারী স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ অনুসারে কাজ করবেন। শত্রু কবলিত এলাকায় অবস্থা বিশেষে বিচার-বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করবেন।

২. সরকারি আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ও মুক্তিফৌজকে সাহায্য করবেন।

৩ .সকল কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য অবিলম্বে নিকটতম মুক্তিসেনা শিবিরে যোগ দেবেন। শত্রুর সঙ্গে সহযোগিতা করবেন না।

৪. বাংলাদেশ সরকার ছাড়া অন্য কারো বাংলাদেশ থেকে কর, খাজনা ও শুল্ক আদায়ের অধিকার নেই।

৫. যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে নৌ চলাচল সংস্থার কর্মচারীরা কোনো অবস্থায় শত্রুকে সাহায্য করবেন না।

৬. নিজ নিজ এলাকায় খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদার ওপর লক্ষ্য রাখবেন।

৭. চুরি, ডাকাতি, কালোবাজারি, মজুতদারির ওপর কঠোর নজর রাখবেন।

৮. ধর্মের দোহাই দিয়ে ও অখন্ডতার বুলি আউড়ে এক শ্রেণীর দেশদ্রোহী মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এদের চিহ্নিত করে রাখুন। এদের সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করুন। তাদের মুক্তিফৌজদের হাতে অর্পণ করুন।

৯. গ্রামে গ্রামে রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলুন এবং রক্ষীবাহিনীর সেচ্ছাসেবকদের মুক্তিবাহিনীর নিকটতম ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।

১০. শত্রুপক্ষের গতিবিধির খবর সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে জানাবেন।

১১. মুক্তিবাহিনীর চলাচলের জন্য চাহিবামাত্র সরকারি যানবাহন হস্তান্তর করতে হবে।

১২. বাংলাদেশ সরকার বা মুক্তিবাহিনী ছাড়া জ্বালানী বিক্রি করা চলবে না।

১৩. কেউ পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অথবা তাদের এজেন্টদের সাহায্য করবে না। যে করবে তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

১৪. গুজবে কান দেবেন না। চূড়ান্ত সাফল্য সম্পর্কে নিরাশ হবেন না।

১৫. সকল সুস্থ ও সবল ব্যক্তিকে নিজ নিজ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিকটতম মুক্তিবাহিনী শিবিরে রিপোর্ট করতে হবে।

১৬. শত্রুবাহিনীর ধরা পড়া কিংবা আত্মসমর্পণকারী সৈন্যকে মুক্তিবাহিনীর কাছে সপর্দ করতে হবে।

১৭. পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সকল প্রকার যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হতে পারে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

১৮. তথাকথিত পাকিস্তান বেতারের মিথ্যা প্রচারণা আদৌ বিশ্বাস করবেন না।

 

দেশের সাধারণ জনগণকে শুত্রুদের সাহায্য করা থেকে বিরত এবং মুক্তিবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়া হয়

দেশের সাধারণ জনগণকে শুত্রুদের সাহায্য করা থেকে বিরত এবং মুক্তিবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়া হয়

নগরবাড়ী-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের ডাববাগান (বর্তমানে শহীদনগর) এলাকায় ইপিআর সুবেদার গাজী আলী আকবরের নেতৃত্বে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, আনসার সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর উত্তরবঙ্গ প্রবেশ রুখে দেয়। পাকিসেনারা সম্মুখ যুদ্ধে টিকতে না পেরে পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায়। যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ওই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর হাবিলদার ইমদাদ উদ্দিন (পাবনা), নায়েক মুফিজ উদ্দিন (ঢাকা), ল্যান্স নায়েক আতিয়ার রহমান (কুষ্টিয়া), সালেহ আহমদ (নোয়াখালী), সিপাহী নূর উদ্দিন (বরিশাল) সহ বেশ ক’জন নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা।

ডাববাগান থেকে পিছু হটে যাওয়া পাকবাহিনী শক্তি বৃদ্ধি করে রাতে আবার আক্রমণ চালায়। পাকবাহিনীর বিশাল এই শক্তির কাছে টিকতে না পেরে মুক্তিসেনারা পিছু হটে গেলে পাকসেনারা গ্রামবাসীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। একে একে পুঁড়িয়ে দেয় ডাববাগানের পার্শ্ববর্তী রামভদ্রবাটি, কোড়িয়াল, বড়গ্রাম, সাটিয়াকোলা গ্রাম। পাকসেনারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে শতাধিক স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে।

সিলেটের সালুটিকর বিমান ঘাটির দখল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ সংঘটিত হয়, স্থলপথের এ যুদ্ধে পরাজয়ের পর হানাদারেরা বিমান হামলা করে। ফলে সেখান থেকে মুক্তিবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়।

কুষ্টিয়ার দর্শনায় পাকিস্তানী সেনাদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই হয় মুক্তিযোদ্ধাদের এবং এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে। এরপর দর্শনায় পাকিস্তানী হার্মাদ বাহিনী লুটপাট, অগ্নিসংযোগ আর গণহত্যার এক বিভীষিকাময় অধ্যায় সংঘটিত করে।

পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কনভেনশন) সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী ও জেনারেল সেক্রেটারী মালিক মোহম্মদ কাসিম এদিন জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে গভর্নর হাউজে সাক্ষাৎ করে পূর্ব পাকিস্তানে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তাদের দলের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জে.এ ভূট্টো করাচিতে এক সভায় যারা পাকিস্তানের অখন্ডতার বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদের সম্পর্কে সরকারের কাছে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেন। সংকট নিরসনে তিনি সবাইকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে বলেন।

ঢাকা নগরীর বিভিন্ন মহল্লার শান্তি কমিটির লিয়াজোঁ অফিসার ও আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়। অ্যাডভোকেট নূরুল হক মজুমদারকে শান্তি কমিটির ৫ নং এলিফ্যান্ট রোড-মগবাজারস্থ কেন্দ্রীয় অফিসের সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।