• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের

যুগোপযোগী গবেষণা নীতিমালা করছে ইউজিসি

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৯  

 

উচ্চশিক্ষায় একটি বিশদ এবং বিস্তৃত গবেষণা নীতিমালা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাখাতকে উন্নত মানসম্পন্ন, স্বনির্ভর ও যুগোপযোগী করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মানসম্পন্ন গবেষণার সংখ্যা খুবই কম। যা আছে তাও পুরানো ধাচের। গবেষণা হতে হবে জনকল্যাণমুখী, যা দেশের মানুষের সমস্যার সমাধান দেবে এবং অন্যদের পথ দেখাবে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা নীতিমালা তৈরি করছে ইউজিসি। 

ইউজিসি সূত্র বলছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষক কিংবা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজেরাই গবেষণা কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ ভালো করছেন, অনেকে আবার জনকল্যাণে অবদান রাখতে পারছেন না। আর যেসব গবেষণা হচ্ছে তা ফলপ্রসু, এমনকি তা জাতীয় পর্যায়ে কাজে আসছে না। আর ব্যর্থ হচ্ছে আন্তর্জাতিক শর্ত পূরণেও। 

কর্মকর্তারা বলছেন, গবেষণা খাতে প্রতিবছরই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজেটের বরাদ্দ বাড়ানো হয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষা স্তরে এ খাতে সেই অর্থ ব্যয় করতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউজিসির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রতিবছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে গবেষণাপ্রস্তাব এবং গবেষণাপত্র পাই। যার অনেকগুলোই মানসম্পন্ন নয় বা অগ্রহণযোগ্য। আবার অনেকগুলো প্রচলিত বিষয়ের ওপর, নতুন কিছু তেমন পাওয়া যায় না। 

ইউজিসি সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ৪৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২ কোটি টাকা বেশি। এরপরও সেভাবে গবেষণা খাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। 

এ অবস্থায় এসব বিষয় বিবেচনায় নিযেই একটি বিস্তৃত গবেষণা নীতিমালা তৈরি করতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে ইউজিসি। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

প্রথম বৈঠকে কমপক্ষে ১৮ টি প্রস্তাব কমিটির কাছ থেকে পেয়েছে ইউজিসি। এসব প্রস্তাবে ফলপ্রসু গবেষণা প্রকল্পগুলোতে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মানুষের উপকারে আসবে, সমস্যার সমাধান করবে-এমন সব গবেষণায় সহযোগিতা ও অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব করেছে কমিটি। 

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিল্পের যৌথভাবে সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া গবেষণাপত্র প্রকাশ বা উদ্ভাবণের বাণিজ্যিকীকরণের পাশাপাশি গবেষণার পেটেন্ট অর্জন এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জার্নালগুলোতে ইউজিসির অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণাপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়ারও প্রস্তাব দেন তারা। 

এছাড়া এসব গবেষণায় উৎসাহী করতে প্রণোদনা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গবেষণা প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ অন্যান্যরা।  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদত হোসেন বলেন, মানসম্পন্ন গবেষণা ছাড়া একটি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যেতে পারে না। আমাদের অনেক শিক্ষকই গবেষণা করেন কিন্তু ডেটাবেস না থাকায় তা যথাযথভাবে প্রকাশ পায় না।   

‘আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের গবেষণাকে পেটেন্ট করার ক্ষেত্রেও অনেক পিছিয়ে রয়েছি। আমরা আমাদের গবেষণায় আউটকাম বা উদ্ধাবিত বিষয়াবলী বাণিজ্যিকীকরণেও ব্যর্থ হচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা কাজের এই প্রচলিত পদ্ধতির পুনঃবিন্যাস করা প্রয়োজন। এছাড়া গবেষণার জন্য বিস্তৃত নীতিমালাও দরকার।’

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উদাহারণ দিয়ে তিনি বলেন, সুইডেন, ডেনমার্কের দিকে তাকালে দেখা যাবে, তারা তাদের গবেষকদের কিভাবে প্রণোদনা দেয়, উৎসাহিত করে। আর সেটা একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকেই। এজন্যই ওইসব দেশ এগিয়ে গেছে।

বাংলাদেশে গবেষণার বিস্তৃতি বাড়াতে ইউজিসির উদ্যোগের কথা জানিয়ে অধ্যাপক ড. শাহাদত হোসেন বলেন, বিস্তারিত একটি নীতিমালা তৈরিতে ইউজিসি উদ্যোগী হয়েছে। এটা খুবই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কারণ ইউজিসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের এ জাতীয় কোনো নীতিমালা তৈরি হয়নি।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য ও প্রখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে আমাদের গবেষণাগুলো জাতীয় চাহিদা বা সমস্যার কথা তুলে ধরছে না। মানুষের কল্যাণে কাজে আসছে না। এ জাতীয় গবেষণা আন্তর্জাতিক মান অনুসারে শিক্ষার মানও বাড়াতে অবদান রাখছে না। তাছাড়া এখনও পর্যন্ত আমাদের কোনো গবেষণা নীতিমালাও নেই। 

‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগতমান তার গবেষণার মান দিয়ে বিবেচিত হয়। দেশ ও বৈশ্বিক প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে এবং নতুন নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন করে। এটা করতে হয় মানসম্পন্ন গবেষণার মাধ্যমে।’

গবেষণা নীতিমালার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পেয়েছি। এগুলো আমাদের একটি বিস্তৃত ও যুগোপযোগী গবেষণা নীতিমালা তৈরিতে কাজে দেবে। 

গবেষণা উন্নয়নে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের কথা তুলে ধরে ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য অর্থায়ন করতে। ইউজিসিও সেভাবে কাজ করতে চায়। এক্ষেত্রে আমরা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে মানসম্মত এবং আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা চাই। 

‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ইমেজ সঙ্কট রয়েছে। আমরা এর থেকে উত্তরণ চাই। এজন্য আমরা ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও নেবো।’ 

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ শিক্ষাবিদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেতে পারে আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি। এজন্য আমাদের দরকার মানসম্পন্ন গবেষণা। যে নীতিমালা করতে যাচ্ছি তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণার মান বাড়ানোর পথ তৈরি করে দেবে বলে আমরা আশাবাদী।   

‘বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের গবেষণা কাজের মাধ্যমে পেটেন্ট অর্জন করছে। এক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পেটেন্টের সংখ্যা মাত্র মাত্র ১০ টি। একুশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,’ যোগ করেন এই গবেষক।