• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

দেখি বাংলার রূপঃ

শের-ই-বাংলার স্মৃতিধন্য চাখারে

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮  

আবুল কাশেম ফজলুল হক! ‘শের-ই-বাংলা’ বা হক সাহেব নামে যিনি সমধিক পরিচিত। আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের এক ঊজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। প্রায় অর্ধশতক ব্যাপী শের-ই-বাংলা এ, কে, ফজলুল হক ছিলেন উপমহাদেশের একজন বিশিষ্ট এবং সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অনগ্রসর মুসলিম সমাজের একজন হয়েও তিনি ছিলেন ইংরেজী, বাংলা ও ঊর্দুতে সমানভাবে পারদর্শী অসাধারণ একজন বাগ্মী। পশ্চাৎপদ মুসলমান সম্প্রদায়, একই সঙ্গে বাঙ্গালী জাতির অগ্রগতিতে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্যে তিনি চীর স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি অনেক রাজনৈতিক পদ অলংকৃত করেছেন। তার মধ্যে কলকাতার ১ম মুসলিম বাঙ্গালী মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩), পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (১৯৫৫), পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর (১৯৫৬-১৯৫৮), প্রভৃতি পদের কথা উল্লেখযোগ্য।   

 কাজী মুহম্মদ ওয়াজেদ এবং বেগম সৈয়দুন্নেসা দম্পতির একমাত্র পুত্র তিনি। শের-ই-বাংলা এ, কে, ফজলুল হক ১৮৭৩ খৃষ্টাব্দে বরিশালের রাজাপুর (বর্তমান ঝালকাঠি জেলার অন্তর্গত) থানার সাতুরিয়া গ্রামে তার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে বরিশাল জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। প্রথম জীবনে বিচারকের চাকরী নিয়ে বরিশালের বাউফল থানার বিলবিলাস গ্রামে বসতি স্থাপন করেন তিনি। পরবর্তীতে তাঁর প্রপিতামহ কাজী মোহাম্মদ আমিন বরিশাল জেলার পিরোজপুর মহকুমার বানারীপাড়া থানার চাখার গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। ১৯০১ সালে পিতার মৃত্যর পর তিনি কলকাতা থেকে বরিশাল আসেন এবং বরিশালে আইন ব্যবসার পাশাপাশি চাখারে তাঁর পৈতৃক জমিদারী ও তালুক দেখাশোনা শুরু করেন। দীর্ঘ কর্মময় জীবনের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ তিনি চাখারে কাটান। চাখার তাই এ মহতী পুরুষের স্মৃতিধন্য। আর আমরা সৌভাগ্যবান বাঙ্গালীর ইতিহাসের এক ঊজ্জ্বলতম নক্ষত্র শের-ই-বাংলা এ, কে, ফজলুল হক তাঁর নিজস্ব দ্যুতিতে আলোকিত করেছেন চাখার তথা পুরো বরিশালকে। 


১৯৮২/১৯৮৩ সালে তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রালয়ের অধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের নিজস্ব বসতভিটার একাংশে শের-ই-বাংলা স্মৃতি যাদুঘর নির্মিত এবং জন সাধারনের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

মোট ২৭ শতক জমির উপর যাদুঘর কমপ্লেক্সটি স্থাপিত। জাদুঘরে মোট ৫টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি ডিসপ্লে রুম, ১টি অফিস রুম ও ১টি লাইব্রেরী। জাদুঘরে ফজলুল হকের ব্যবহৃত আরাম কেদারা, খাট, আলনা, ড্রেসিং টেবিল, টুল, চেয়ার টেবিল, গ্লাস, ছড়ি প্রভৃতি আছ। কিছু পুরাকীর্তি যেমন- কালো পাথরে নির্মিত অষ্টভূজা মারীচি দেবীর মূর্তি, কালো পাথরে নির্মিত ১টি বড় শিব লিঙ্গ, ব্রোঞ্জের বৌদ্ধ মূর্তি, ব্রিটিশ ও সুলতানি আমলের স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র মুদ্রা প্রভৃতিও আছ ডিসপ্লেতে। উপহার পাওয়া ১টি কুমিরের খোলসও এখানে সযত্নে ঠাঁই পেয়েছে। যাদুঘরটি সোম-শনি, সপ্তাহে ৬ দিন দর্শনার্থীদের জন্যে খোলা থাকে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ আর সোমবার ১ বেলা, দুপুর ১.৩০-৫ টা পর্যন্ত খোলা।শীতকালে ৯-৫ টা এবং গ্রীষ্মকালে ১০-৬ টা পর্যন্ত এটা খোলা থাকে। মাত্র ১০ টাকা টিকিট মূল্যে এখানে ঢোকার এবং ঘুরে দেখার সুযোগ মিলবে। 

শের-ই-বাংলা স্মৃতি যাদুঘরের ডান পাশের সামনের অংশে সে সময়ের সুন্দর ১টি মসজিদ এবং বামপাশের অংশে তার বসতভিটা এখনো কালের সাক্ষী হয়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই আছে তাঁর প্রতিষ্টিত চাখার বয়েজ হাই স্কুল এবং ওয়াজেদ মেমোরিয়াল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।  

যেভাবে যাবেনঃ    বরিশাল শহরের নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে বরিশাল-বানারী পাড়ার বাসে যেয়ে নামতে হবে গাভা বাজারে। বাস ভাড়া নেবে ৩০-৪০ টাকা। যেতে সময় লাগবে ১.১৫-১.৩০ ঘন্টা। গাভা বাজার থেকে ভ্যানে/অটোতে ১০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যাবেন চাখার শের-ই-বাংলা এ, কে, ফজলুল হকের বাড়ীতে। এছাড়া রিজার্ভ অটো/ রেন্ট-এ কারে যাওয়ার সুযোগ’তো আছেই।

অনন্য প্রতিভার অধিকারী ক্ষণজন্মা এ মানুষটি আমাদের বরিশালের সন্তান। তাঁকে জানা, আমাদের উত্তরসুরীদের কাছে তাকে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার নৈতিক দায়িত্বটা আমাদেরই। ১টা দিন থেকে কিছুটা সময় বের করে তাই ঘুরে আসতে পারেন শেরে-ই-বাংলার স্মৃতিধন্য চাখার থেকে।