• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দলের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় শেখ হাসিনা মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে মুজিবনগর দিবস বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ নতুন বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী আ.লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণকে দিতে, আর বিএনপি আসে নিতে: প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিশোর অপরাধীদের মোকাবেলায় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই : ওবায়দুল কাদের

সুস্থ থাকতে মেনে চলুন রাসূলের (সা.) নির্দেশনাগুলো

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২০  

সুস্থ থাকতে মানুষ চিকিৎসকের যেকোনো পরামর্শ বা চিকিৎসা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। কিন্তু প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) মানবজাতিকে সুস্থ থাকতে যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন তা পুরোপুরি মেনে চললে সুস্থতা অবধারিত। 

তাই রাসূলের (সা.) যেসব নির্দেশনা মেনে চললে সুস্থ থাকা যায় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

(১) মানুষ সাধারণত রোগাক্রান্ত হয় খাদ্য ও পানীয়ের দ্বারা। সে হিসেবে সব রোগের মূল কেন্দ্রস্থল মানুষের পেট। তাই খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিমিত মাত্রায় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম এ বিষয়ে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছে এবং অতি ভোজন করতে নিরুৎসাহিত করেছে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য দিয়ে, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

(২) খাবার ও পানীয় ঢেকে রাখা। রাসূলুল্লাহ (সা.) খাদ্য ও পানীয় সবসময় ঢেকে রাখার জোর তাকিদ দিয়েছেন। কেননা, তাতে অসুস্থতার পাশাপাশি মানুষের মৃত্যুরও ঝুঁকি রয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হচ্ছে- ‘রাসূল (সা.) বলেন, তোমরা খাদ্য ও পানীয় ঢেকে রাখো, মশকের মুখ বন্ধ করে দাও, প্রদীপ নিভিয়ে দাও এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও। কারণ, শয়তান বন্ধ মশক খুলতে পারে না, বন্ধ দরজাও খুলতে পারে না এবং বন্ধ পাত্রও খুলতে পারে না। তোমাদের কোনো ব্যক্তি যদি পাত্র ঢাকার মতো কিছু না পায়, তবে সে যেন একটি কাঠ আড়াআড়িভাবে রেখে দেয় এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

(৩) খাদ্যে ফুঁ না দিয়ে খাবার শুরু করা। খাবার ও পানীয়ে ফুঁ দেয়ার কারণে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। ‘হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) পানীয়ে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। একজন আরজ করল, পাত্রে কখনো কখনো ময়লা আবর্জনা দেখা গেলে কি করা? তিনি (সা.) বললেন, তা ঢেলে ফেলে দেবে।’ (তিরমিজি, রিয়াদুস সালেহীন)।

আধুনিকবিজ্ঞান বিষয়টিকে জোর দিয়ে আমল করার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ, পানীয়ে ফুঁ দিয়ে তা পান করলে তাতে কার্বনডাইঅক্সাইড মিশে আমাদের শরীরে ক্ষতিকারক জটিলতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

(৪) হাত পরিষ্কার রাখার অভ্যাস সবারই থাকা দরকার। যার মাধ্যমে সহজেই অসুস্থতা থেকে বাঁচা যায়। হাত নানা ধরনের জীবাণু বহন করে বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তাই রোগমুক্ত থাকতে নিয়মিত ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার অভ্যাস একটি ভালো ভ্যাকসিনের চেয়ে বেশি কাজ করে। তাই দেড় হাজার বছর পূর্বে খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধৌত করার প্রতি ইসলামের নির্দেশ এসেছে। 

রাসূল (সা.) খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার আদেশ দিয়েছেন। ‘আম্মাজান আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) পানাহারের আগে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নিতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)। 

আবার পায়খানা থেকে পানি খরচ করার পর বাইরে এসে মাটিতে হাত মলার অভ্যাস ছিল প্রিয় নবীজি (সা.) এর। ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নবীজি (সা.) পায়খানায় যেতেন আমি তাঁর জন্য পিতল বা চামড়ার পাত্রে পানি নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি (সা.) ইস্তিঞ্জা করে মাটিতে হাত মলতেন। (সুনানে আবু দাউদ)।

(৫) দৈহিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও জরুরি। বরং মানসিক সুস্থতা দৈহিক সুস্থতার পূর্বশর্ত। কারণ মানসিক প্রশান্তি ও উৎফুল্লতা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মানসিক উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা দেহের রোগ প্রতিরোধ কমিয়ে ফেলে। তাই ইসলাম মনোদৈহিক স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে বৈবাহিক জীবন ব্যবস্থার প্রতি খুব গুরুত্ব দিয়েছে। তা ছাড়া ইসলামের ইবাদত ব্যবস্থা ও জিকির-আজকারের দ্বারাও মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘জেনে রাখ! আল্লাহ তায়ালার জিকির দ্বারা অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।’ (সূরা: রাদ, আয়াত: ২৮)।

(৬) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইসলামের মৌলিক নির্দেশনা ও ঈমানের অঙ্গ। পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতিও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারণ, পরিবেশ দূষণের কারণে মানব সমাজে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়ায়। হাদিসে এসেছে, রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের বাড়ির আঙ্গিনার সব দিকে পরিষ্কার রাখবে। ইহুদিদের অনুকরণ করো না। তারা বাড়িতে আবর্জনা জমা করে রাখে।’ (সুনানে তিরমিজি)। তা ছাড়া কেউ যদি মিসওয়াক, ওজু, গোসল, পোশাক-আশাক প্রভৃতির ক্ষেত্রে ইসলামি নির্দেশনা মেনে চলে তাহলে সে অপরিচ্ছন্নতাজনিত রোগব্যাধি থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে।

(৭) যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করা নিষেধ করা হয়েছে। কারণ তাতে রোগব্যাধি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তিন অভিশপ্ত ব্যক্তি থেকে বেঁচে থাকো। তারা হলো- যে পানির ঘাটে, রাস্তার ওপর ও গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ (সুনানে আবু দাউদ)।

এককথায়, আধুনিক বিজ্ঞান মানবদেহ রোগাক্রান্ত হওয়ার যেসব দিক নির্ণয় করেছে এবং এর প্রতিষেধ আবিষ্কার করেছে, তা প্রায় দেড় হাজার পূর্বে মানবতার কল্যাণ ও মুক্তির দিশারী বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) পুরোপুরিভাবে বর্ণনা করে গিয়েছেন। তাই বলা যায়, ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থার নাম, যেখানে মানবতার কল্যাণ ও সফলতার জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার সেখানে তাই করা হয়েছে। কেউ যদি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলে তাহলে সে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে ইনশাআল্লাহ! 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের মহামারি করোনাসহ বিভিন্ন রোগ-বালাই থেকে  মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন।। আমীন।