• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা

২০২০ সালের সেরা চারটি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

বিশ্বের আনাচে-কানাচে প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে থাকেন মানবসভ্যতার কিংবা পৃথিবীর সঠিক ইতিহাস প্রতি বছরই। প্রতি বছরই দুর্দান্ত আর দারুণ কিছু আবিষ্কার করে ফেলে এই প্রত্নতাত্ত্বিকের দল। অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক আর ঐতিহাসিক আবিষ্কার ধুলোর আবরণ থেকে বেরিয়ে আলোর মুখ দেখেছে। নাজকার বিড়াল, আমাজনের গহীনে থাকা সিস্টিন চ্যাপেল অভ অ্যানশেন্ট আর্ট, সাকারা নেক্রোপলিসের মমি, কিংবদন্তি রমুলাসের সমাধিসহ আরো অনেককিছুই আবিষ্কার হয়েছে গেল বছর। আজকের আয়োজনে সেরা কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার সম্পর্কে।

রোমুলাসের সমাধি
রোম, ইতালি

একদল প্রত্নতাত্ত্বিক ঘোষণা দেন, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা রোমান ফোরামের সিনেট হাউজের নিচে কিংবদন্তি রোমুলাসের সমাধির সন্ধান পেয়েছেন। কিংবদন্তি অনুসারে, ৭৫৩ সালে অর্থাৎ ৮ম শতকে রোমুলাসের হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল রোম শহর। রোমুলাস এবং রেমুস- দুই ভাইকে শিশু অবস্থায় নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল। তবে আশ্চর্যজনকভাবে শিশু দুটোকে দত্তক নেয় এক মায়া নেকড়ে।

কে হবে শহরের রাজা কিংবা কোথায় হবে শহরের অবস্থান, এ নিয়ে বিতর্কে রোমুলাস হত্যা করেন নিজের ভাই রেমুসকে এবং নিজেকে রোমের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। মূলত, রোমুলাস থেকেই রোম শব্দের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। যদিও বেশিরভাগ ইতিহাসবিদই গল্পটিকে পৌরাণিক কাহিনী বলে উড়িয়ে দেন।  রোমুলাস বলে কারো অস্তিত্ব নেই বলেই স্বীকৃতি দেন। তবে প্রাচীন রোমানরা ব্যাপারটিকে গুরুত্বসহকারেই নিয়েছিল। 

আর সেজন্যই রোমুলাসের সমাধি তারা শহরের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থান রোমান ফোরামের সিনেট হাউজের নিচে করেছিল। সমাধির ভেতরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা, একটি ফাঁকা সারকোফ্যাগাস পেয়েছেন, যা ৪.৫ ফুট লম্বা। এটি নির্মাণ করা হয়েছিল আগ্নেয়গিরির পাতলা শিলাখণ্ড ভেঙে, যা টাফ নামে পরিচিত। বাংলায় একে চুনাপাথরও বলা হয়ে থাকে। এটি উদ্ধার করা হয়েছে রোমান ফোরামের তলদেশে ক্যাপোতোলিনে হিল নামক পাহাড়ের চূড়া হতে, যা রোমের মূল সাত পাহাড়ের অন্যতম একটি। থ্রিডি লেজার স্ক্যান করে বর্তমানে এ সমাধি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য পাবে বিশ্ববাসী। 

সিস্টিন চ্যাপেল অভ অ্যানশেন্ট আর্ট
কলম্বিয়ান আমাজন 
আমাজন হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট। কথিত আছে, এ বনের মাত্র ২০ শতাংশ জায়গাতেই কেবল মানুষের পা বাড়ছে। এর গহীনে লুকিয়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের অজানা সব ইতিহাস। মুখে মুখে রটে যাওয়া কথা কখনো সত্য হয়, আবার কখনো হয় না। তবে আমাজনের গহীনে যে প্রচুর ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে, তার প্রমাণ হলো ২০২০ সালে। ১২,৫০০ বছর আগেকার বরফযুগের এক প্রাগৈতিহাসিক চিত্রকর্ম পাওয়া গেছে কলম্বিয়ান আমাজনের সর্ব উত্তরের দিকে এক পাহাড়ের দেয়াল জুড়ে। 

কলম্বিয়ান আমাজনের এই অংশটা বিদ্রোহী গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে তবেই সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে পেরেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। প্রাগৈতিহাসিক এ চিত্রকর্ম শোভা পাচ্ছে সুদীর্ঘ ৮ মাইল বা ১২.৯ কিলোমিটার পাথুরে এক ক্যানভাসে। ধারণা করা যায়, বরফযুগের চিত্রকর্মটির বয়স ১১,৮০০ থেকে ১২,৫০০ বছর। লাল গিরিমাটির সাহায্যে আঁকা হয়েছে এটি। 

পাহাড়ের দেয়ালে কিছু চিত্রকর্ম এতটা উঁচুতে অবস্থিত যে তা জমিনে দাঁড়িয়ে ঠিকভাবে অবলোকন করা যায় না। তাই ড্রোন চালিয়ে সেগুলোর ছবি তোলা হয়েছে। কাঠের উঁচু মাচা ব্যবহার করে যে এসব চিত্রকর্ম আঁকা হয়েছে, তাও ফুটে উঠেছে এই চিত্রকর্মে। একইসঙ্গে বরফযুগে বিচরণ করা সব প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী, যেমন- মাস্টোডন, দানব আকৃতির শ্লথ, কুমির, হরিণ, বানরসহ নাম না জানা বহু বন্য জন্তুর প্রতিকৃতি। এমনকি বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় অনেক প্রাণীরও দেখা মিলেছে। 

সাকারা নেক্রোপলিসের মমি
কায়রো, মিশর 

পৃথিবীর সবচাইতে প্রাচীন সভ্যতা হচ্ছে মিশর। ধারণা করা যায়, মিশরীয় সভ্যতার অনেক নিদর্শনই মরুভূমির বালির নিচে এখনো চাপা পড়ে আছে। ২০২০ সালের গ্রীষ্মে সেরকমই একটি আবিষ্কার করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কায়রোর দক্ষিণে সাকারা মূলত একটি নেক্রোপলিস। যেখানে মিশর সভ্যতার অসংখ্য গণকবর রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আর সেই সাকারা থেকেই মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মকর্তারা ১০০টি প্রাচীন কফিন উদ্ধার করেছেন। 

কফিনগুলোর কয়েকটির মধ্যে সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় কিছু মমিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, ৪০টি সোনার ভাস্কর্য-মূর্তি এবং প্রতিমা আবিষ্কৃত হয়েছে। কাঠের কফিন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সমাহিত করা হয়েছিল টলেমাইক পিরিয়ডে, যা ৬৬৪ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪ শতাব্দী পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। দুই দেবতার সংমিশ্রিত এক অবতার, মিশরীয় দেবতা পাতাহ-সেকারের মূর্তিও পাওয়া গেছে এ অঞ্চল থেকে। 

পাতাহ ছিলেন মেমফিসের দেবতা এবং সেকার ছিলেন সাকারার দেবতা। ধারণা করা হয়, সেই সময়টাতে মিশর বাইরের শক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল, যেমন - আসিরিয়ান, পারসিয়ান এবং গ্রিক। এই প্রাচীন সমাধিস্থলে বিশ্বের সবচাইতে পুরনো ইলাস্ট্রেশন বই, রহস্যময় এক ব্যক্তির সমাধিকক্ষ। আরো অন্যান্য রহস্যময় জিনিসের সন্ধান মিলেছে। যেহেতু প্রাচীনকাল থেকে এখন পর্যন্ত মিশরের নিদর্শন চুরি ঘটনা চলমান, তা সত্ত্বেও এমন একটা আবিষ্কার সত্যিকার অর্থেই অবিস্মরণীয়। 

নাজকার বিড়াল
নাজকা, পেরু 

ইতোমধ্যেই ইউনেস্কো কর্তৃক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষিত হয়েছে পেরুর নাজকা লাইন। সম্প্রতি সেখানকার এক পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করতে গেলে প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার একটি জিওগ্লিফের সন্ধান মেলে। জিওগ্লিফটার অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে এবং খানিকটাই কেবল দৃশ্যমান হয়েছিল। তবে সংরক্ষিত কাজের মাধ্যমে সেটির একটি পূর্ণ চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। 

পাহাড়ের গায়ে অপরিণত হাতের সেই আঁকিবুঁকি আসলে একটা বিড়ালের প্রতিচ্ছবি। অবশ্য দেখে মনে হয়, যেন কোনো বাচ্চা ছেলে অন্যমনস্কভাবে হিজিবিজি কেটেছে। গবেষণারত প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনুমান করছেন যে, জিওগ্লিফটি খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ থেকে ১০০ শতাব্দীর আশেপাশে নির্মাণ করা হয়েছিল। কেননা, নাজকা লাইনের বেশিরভাগ রেখাসমূহ বা জিওগ্লিফের নির্মাণকাল ছিল এর আশেপাশেই।

১২০ ফুট লম্বা এই বিড়ালের জিওগ্লিফটি আবারো প্রত্নতাত্ত্বিক আর ইতিহাসবিদদের আগ্রহ উসকে দিয়েছে। এই নাজকা লাইনে এখনো লুকিয়ে রয়েছে হাজার বছরের অমীমাংসিত রহস্য। আর তাই গবেষণাও চলছে এই বিড়ালসহ পুরো নাজকা লাইনের, নতুন করে নতুন উদ্যমে।