• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

অমুসলিমদের সঙ্গে ভালো ব্যবহারে কুরআনের নির্দেশ

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানের প্রতি আয়াত নাজিল করে এ নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘মুমিনগণ যেন মুমিনদের পরিবর্তে কাফের বা অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে।’ কুরআনের একাধিক স্থানে এ নির্দেশনা এসেছে।

কুরআনের এসব নির্দেশনার অর্থ এ নয় যে, অবিশ্বাসী কিংবা অমুসলিমদের সঙ্গে সদাচরণ বা ভালো ব্যবহার করা যাবে না। বরং কুরআন ও হাদিসের একাধিক স্থানে অবিশ্বাসী বা অমুসলিমদের সঙ্গে সদাচরণের গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বদরের যুদ্ধে বন্দি হওয়া অমুসলিম অবিশ্বাসীরাই এর জলন্ত প্রমাণ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বদর যুদ্ধের বন্দিদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ মোতাবেক বিশ্বমানবতার জন্য এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

যুদ্ধকালীন সময়ে সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের খাদ্য বন্দিদের খেতে দিয়েছিলেন। এমনকি নিজেরা না খেয়ে ক্ষুধা নিয়ে রাত অতিবাহিত করেছিলেন। নিজেরা না খেয়ে ক্ষুধার্থ অবস্থায় অবিশ্বাসী শত্রুদের খাবার দেয়ার এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

বদর যুদ্ধের সময় বন্দিদের সঙ্গে করা উত্তম আচরণেই প্রমাণিত হয় যে, অমুসলিম বা অবিশ্বাসীদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহারের তাগিদ দেয় ইসলাম। তবে ইসলাম যে বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে তাহলো-
‘অবিশ্বাসী বা অমুসলিমদের সঙ্গে ওই আন্তরিক প্রীতি ও ভালোবাসা রাখা যাবে না। যে আন্তরিক প্রীতি ও ভালোবাসা মুসলমানদের সঙ্গে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম।’

অবিশ্বাসী কাফের মুশরেকদের সঙ্গে আন্তরিক ভালোবাসার অনুমতি না দিলেও তাদের সঙ্গে সৌজন্যতা বা শুভেচ্ছা বিনিময় এবং তাদের জন্য কল্যাণকর কাজে অংশগ্রহণে বাধা নেই। তবে শর্ত হলো- যেসব অমুসলিম মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত না হয়। কিংবা মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধকারী কোনো শক্তিকে সহায়তা না করে।

মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করে না, তাদের ক্ষতি হবে এমন কাজ করে না- এমন অমুসলিম বা অবিশ্বাসীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ এবং তাদের উপকার করতে ইসলাম নিষেধ করে না। এক্ষেত্রে কুরআনের নির্দেশনা হলো-
‘দ্বীনের (ইসলামি জীবনব্যবস্থার) ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ৮)

আল্লাহর তাআলার এ নির্দেশ থেকে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় যে, ইসলাম কোনো অমুসলিম বা অবিশ্বাসীর সঙ্গে খারাপ আচরনের নির্দেশ দেয় না। যতক্ষণ না তারা নিরাপদে ইসলামি জীবন ব্যবস্থার আলোকে চলাফেরার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না করে।

বরং ইসলাম অবিশ্বাসী কাফের মুশরেকদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশ দেয়। আর তাই তাদের কল্যাণের কাজে এগিয়ে যাওয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সুতরাং মুসলিমদের দ্বীনি ক্ষতি ছাড়া সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলিম-অমুসলিম একে অপরের কল্যাণ কাজ করায় কোনো ক্ষতি নেই। এমনকি অমুসলিমদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠাসহ কল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণে বাধা নেই।

উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক মুমিনকে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওই হাদিসের কথা স্মরণ রাখতে হবে যেখানে তিনি কাফের মুশরেকের সঙ্গে আন্তরিক প্রীতি ও ভালোবাসা রাখা সম্পর্কে মুসলমানদের সতর্ক করে বলেছেন-
‘দুনিয়াতে যার সঙ্গে যার ভালোবাসা রয়েছে পরকালে তার সঙ্গে তার হাশর হবে।’

এ হাদিসের মর্মানুযায়ী কাফের মুশরেকদের সঙ্গে আন্তরিক প্রীতি ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক রাখা যে বিপজ্জনক তা বলার অপেক্ষা রাখেন। আর আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব ও শত্রুতা পোষণ করা ঈমানের অন্যতম বৈশিষ্ট্যও বটে। হোক সে মুসলিম কিংবা অমুসলিম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুমিনদের সঙ্গে পরস্পর আন্তরিক প্রীতি ও ভালোবাসার সুসম্পর্ক গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন। কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী যতক্ষন পর্যন্ত অবিশ্বাসী বা অমুসলিমদের দ্বারা দ্বীনি ক্ষতি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করার তাওফিক দান করুন। সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে ইসলামের নীতি অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।