• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

বিদেশ ভ্রমণে মহানবী (সা.)

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২০  

আল্লাহ তাআলা পুরো পৃথিবীকেই মানুষের ধর্ম ও কর্মের জন্য অবাধ বিস্তৃত করে রেখেছেন। আর এ বিশাল বিস্তীর্ণ পরিসরের প্রতিটি স্থানেই রয়েছে আল্লাহপ্রদত্ত কোনো কল্যাণ ও জীবনোপকরণ। তাই শিক্ষা অর্জন কিংবা জীবিকা উপার্জন অথবা ধর্মের তাগিদে মানুষকে ছুটে যেতে হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-ও তাঁর বরকতময় জীবনে নানা প্রয়োজনে দূরদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সে দেশগুলো ইতিহাসে ‘বিলাদুশ শাম’ (সিরিয়া, জর্দান, লেবানন ও ফিলিস্তিন) নামে পরিচিত।

তৎকালীন সময়ে এই ‘বিলাদুশ শাম’ আরব ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমান আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক সীমারেখায় তা কয়েকটি পৃথক রাষ্ট্রে বিভক্ত। নিম্নে রাসুল (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত দেশগুলোর ভৌগোলিক অবস্থান ও ভ্রমণ প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো।

 

সিরিয়া

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে রাসুল (সা.) দুইবার সিরিয়া সফর করেন। প্রথমবার মাত্র ১২ বছর বয়সে তাঁর শ্রদ্ধেয় চাচা আবু তালিবের সফরসঙ্গী হয়েছিলেন। ২৫ বছর বয়সে আরবের বিত্তশালী বিধবা নারী খাদিজা (রা.)-এর ব্যাবসায়িক পণ্য নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সিরিয়ায় গমন করেন। নবুয়তপূর্ব এ দুটি সফরেই রাসুল (সা.) থেকে অলৌকিক ঘটনা প্রকাশ পেয়েছিল।

সিরিয়ার নিকটবর্তী শহরে জারজিস নামক এক খ্রিস্টান ধর্মযাজক বাস করতেন; তাঁর উপাধি ছিল বুহায়রা বা বাহিরা। আগের আসমানি গ্রন্থসমূহে উল্লিখিত শেষ নবীর সব নিদর্শন সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত ছিলেন। মক্কার ব্যবসায়ী-দল যখন বসরায় শিবির স্থাপন করেন, তখন পাদ্রি বাহিরা গির্জা থেকে বেরিয়ে তাঁদের কাছে আগমন করেন এবং সবাইকে আতিথেয়তায় আপ্যায়িত করেন; এর আগে কখনো তিনি গির্জা থেকে বেরিয়ে কোনো বাণিজ্যিক কাফেলার সঙ্গে এভাবে সাক্ষাৎ করেননি।

পাদ্রি কিশোর মুহাম্মদ (সা.)-এর অবয়ব, আচরণ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেন এবং তিনি তাঁর মধ্যে আখেরি নবীর নিদর্শন দেখতে পেয়ে তাঁর হাত ধরে বলেন, ‘ইনি হচ্ছেন বিশ্ব জাহানের সর্দার। আল্লাহ তাঁকে বিশ্ব জাহানের রাসুল মনোনীত করবেন।’

কাফেলার লোকজন বলেন, ‘আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন যে তিনিই সর্বশেষ নবী?’ বললেন, ‘তোমাদের আগমনের সময় দূর থেকে আমি প্রত্যক্ষ করেছি যে এমন কোনো বৃক্ষ কিংবা প্রস্তরখণ্ড বাকি ছিল না, যা এই কিশোরকে সিজদা করেনি। আর এসব সৃষ্টিরাজি নবী-রাসুল ছাড়া অন্য কাউকে কখনো সিজদা করে না। তার কাঁধের নিচে ‘মোহরে নবুয়ত’ দেখেও আমি তাঁকে চিনতে পেরেছি। আমাদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল সূত্রে আমরা এসব তথ্য আগেই পেয়েছিলাম।’ (সিরাতে মুস্তফা : ১/১১৬-১১৭)

পঁচিশ বছর বয়সের দ্বিতীয় সফরেও নাসতুরা নামক এক সংসার-বিরাগী সন্ন্যাসী রাসুল (সা.)-এর মাঝে শেষ নবীর আলামত দেখতে পেয়েছিলেন। সেই সফরে খাদিজা (রা.)-এর কৃতদাস মাইসারা রাসুলের সঙ্গে ছিলেন। নাসতুরা মাইসারাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘নবীর চোখে কি লাল ডোরা রয়েছে?’ মাইসারা বলল, ‘উনার ওই লাল বর্ণ কখনো দূর হয় না।’ তত্ক্ষণাৎ সন্ন্যাসী বলে উঠল, ‘তিনি বিশিষ্ট ব্যক্তি, তিনিই নবী, এবং তিনিই হবেন সর্বশেষ নবী।’ তা ছাড়া প্রচণ্ড রোদে রাসুলের ওপর অলৌকিক ছায়া এবং ব্যবসায় অপ্রত্যাশিত বিপুল মুনাফা মাইসারা ও খাদিজা (রা.)-কে অভিভূত করেছিল। (সিরাতে মুস্তফা : ১/১৩০-১৩১)

 

ফিলিস্তিন

বর্তমান ফিলিস্তিনের সরকারি নাম দাওলাতু ফিলাসতিন। বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিন দূতাবাসের তথ্য মতে, দেশটির আয়তন ৬০২০ বর্গকিমি। ১ জুলাই ২০১৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ৪৪ লাখ ২০ হাজার ৫৪৯। যার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৪৩ লাখ ১০ হাজার ৩৫। ফিলিস্তিনের রাজধানী (ঘোষিত) পূর্ব জেরুজালেম, প্রশাসনিক শহর রামাল্লাহ, বৃহত্তর শহর গাজা ভূখণ্ড। ১৫ নভেম্বর ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সর্বপ্রথম আলজেরিয়া স্বীকৃতি প্রদান করে, এরপর একে একে ওআইসিভুক্ত মুসলিম দেশগুলোও স্বীকৃতি দেয়। ২৯ নভেম্বর ২০১২ সালে মার্কিন চাপ সত্ত্বেও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৩৮ ভোটে দেশটিকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের পর্যায় থেকে  ‘Non-member Observer State’ পর্যায়ে স্বীকৃতিদান করে।

 

ভ্রমণ প্রেক্ষাপট ও ঐতিহাসিক ঘটনা

ঐতিহাসিক মিরাজ রজনীতে ঊর্ধ্ব জাহান ভ্রমণের প্রাক্কালে রাসুল (সা.) ফিলিস্তিনের মসজিদে আকসায় কিছু সময় অবস্থান করেছিলেন। এই পবিত্র ভ্রমণে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মহান ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.)। মসজিদে হারাম থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে রাসুল (সা.) প্রথমে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করেন। নবী করিম (সা.)-এর শুভাগমন উপলক্ষে আগে থেকেই সব নবী সেখানে অপেক্ষমাণ ছিলেন। এরপর কেউ একজন আজান দেন, ইকামতও শেষ করেন। কিন্তু তবু সবাই কাতারবদ্ধ দাঁড়িয়ে ইমামের অপেক্ষা করছিল, তখনই জিবরাঈল (আ.) নবী করিম (সা.)-কে হাত ধরে সামনে এগিয়ে দিলেন। নবীজি সেই জামাতের ইমামতি করলেন। নামাজ শেষে জিবরাঈল নবীজিকে লক্ষ্য করে বলেন, আপনার ইমামতিতে কারা নামাজ পড়েছে জানেন? নবীজি বললেন, আমি জানি না। জিবরাঈল বললেন, আল্লাহর প্রেরিত সমস্ত আম্বিয়ারা এবং আকাশের সম্মানিত ফেরেশতারা আপনার পেছনে নামাজ আদায় করেছেন। (সিরাতে মুস্তফা : ১/৩৫৯-৩৬০)