• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধা থেকে যেভাবে পপগুরু হয়েছিলেন আজম খান

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

গানের প্রতি, বিশেষ করে গণসংগীতের প্রতি একটা বাড়তি টান তার মনে ছিল। কিন্তু পুরোদস্তুর সংগীতশিল্পী হবেন, এমনটা ভাবেননি কখনও। বরং পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশ ও প্রজন্মের স্বার্থেই তিনি গলায় তুলে নিয়েছেন গান। নাম তার আজম খান। যাকে বাংলা পপ গানের গুরু বলে অসংকোচে স্বীকার করেন সবাই।

একুশের টগবগে তরুণ হয়ে তিনি গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। সেকশন কমান্ডার হয়ে লড়াই করেছিলেন পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা কেন গানে এসেছিলেন? জবাবটা জীবদ্দশায় তিনিই দিয়েছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। বলেছেন, ‘যুদ্ধ করে আসলাম। চোখের সামনে দেখলাম তরুণ প্রজন্ম কেমন যেন হতাশায় ভুগছে। নানা অন্যায়-অপরাধ কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে। মনে হলো একটা কিছু করা দরকার। মাথায় এলো, আমার তো সংগীতের জোর আছে। যুদ্ধের ক্যাম্পেও গান করেছি। তো এই সংগীত দিয়েই তরুণদের আমি আটকাতে চেয়েছি। ওরা যাতে উন্নত বিশ্বের উন্নত মানসিকতায় বেঁচে থাকে। এভাবেই গানে জড়িয়ে পড়া। দিনরাত নাওয়া-খাওয়া ভুলে পড়ে থাকতাম গানে।’

আজম খানের আরও এক বিস্ময়কর দিক ছিল। তিনি কখনও কাগজ-কলমে গান লিখতেন না। এমনকি তার এত এত গানের সংরক্ষণও তার কাছে ছিল না। মাথায় কোনও শব্দ-কথা এলে সেটাকেই বড় করে গানে রূপ দিতেন। এরপর সুর দিয়ে তা গাইতেন। জাদুকরি উপায়ে সেই অলিখিত কথা-সুর ছড়িয়ে যেতো দেশজুড়ে। যা এখনও সমানভাবে আকৃষ্ট করে শ্রোতাদের। 

হঠাৎ আজম খানের প্রসঙ্গ টানার কারণ, আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি তার জন্মদিন। ১৯৫০ সালের এই দিনে তিনি ঢাকার আজিমপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তার বেড়ে ওঠা কমলাপুরে। তার আসল নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। দলটির সঙ্গে ঘুরে ঘুরে গানও করেছেন তিনি। 

মুক্তিযোদ্ধা থেকে যেভাবে পপগুরু হয়েছিলেন আজম খান

স্বাধীনতার পরের বছরই নিজের একটি ব্যান্ড গঠন করেন আজম খান—‘উচ্চারণ’ নামে। এখান থেকে তিনি পশ্চিমা ঢঙে গান বানানো শুরু করেন। তবে তার গানগুলো ছিল সহজ-কথা সুরে। প্রথম বছরেই বিটিভিতে গান করার সুযোগ পান আর ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি গেয়ে দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে যান। 

পরবর্তী সময়ে আরও বহু গানে শ্রোতাদের মনে ঝড় তুলেছিলেন আজম খান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—‘আমি যারে চাই রে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অ্যাকসিডেন্ট’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানী’, ‘আসি আসি বলে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে না’ ইত্যাদি। 

আজম খানকে ‘গুরু’ হিসেবে প্রথম ডাকা শুরু করেছিলেন তার সতীর্থ, গিটারিস্ট রকেট। পরে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সবাই তো বটে, শ্রোতারাও তাকে ‘গুরু’ বলে ডাকা শুরু করেন। যদিও এই ডাকে বরাবরই সবিনয় অস্বস্তি ছিল আজম খানের।  

শুধু গান নয়, তিনি অভিনয় ও মডেলিংও করেছেন। ১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ নামে হিরামনের একটি নাটকে কালা বাউলের চরিত্রে এবং ২০০৩ সালে শাহীন-সুমন পরিচালিত ‘গডফাদার’ চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এছাড়া কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবেও তাকে দেখা গেছে।

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক দেওয়া হয়। যদিও এর ৭ বছর আগেই, ২০১১ সালের ৫ জুন তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।