• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

ইসলামে মাতৃভাষার চর্চা

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২০  

আল্লাহপাক মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা আখ্যায়িত করেছেন এবং তাদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন যাতে তারা একে অন্যের সাথে ভাবের আদান-প্রদান করে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তুলতে পারে। কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছেঃ ‘আর তার নির্দেশনাবলির মধ্যে রয়েছে মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য।’ বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ৬ হাজারের অধিক ভাষা প্রচলিত আছে। এর প্রত্যেক ভাষায়ই কথা বলে একেকটি জনগোষ্ঠী।

এ ভাষাগুলোই প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের মাতৃভাষা। ইসলাম প্রত্যেক জাতি-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেছে। কারণ ইসলাম মনে করে মাতৃভাষার সাথে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর সভ্যতা ও সংস্কৃতি জড়িত থাকে। একে অপরের সাথে ভাবের আদান-প্রদান করা, সৎ ও ন্যায় কাজ করা অসৎ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা বা বাধা প্রদান করা, ধর্মের বিধিবিধান প্রতিপালন করা, আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা কেবল মাতৃভাষার মাধ্যমেই সম্ভব। ইসলাম ভাষার বিষয়টিকেও সার্বজনীন আখ্যা দিয়েছে। বর্ণ, আঞ্চলিকতা ও ভাষার সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে ইসলাম ধর্মীয় প্রচারে মাতৃভাষা চর্চার জোরালো তাগিদ দিয়ে বলেছে­ ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে বিজ্ঞানসম্মত ও উত্তম ভাষণ দ্বারা আহ্বান করো এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে আলোচনা করো [নাহলঃ ১২৫]।
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। বাঙালি জাতির জীবনে কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ ভাষার এক বেদনাবিধুর ইতিহাস রয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এক বাঙালি ছাড়া আর কোনো ভাষাগোষ্ঠীর জীবনে ভাষার জন্য আন্দোলন হয়নি। রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়নি। রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে কেবল বাঙালিরাই বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পেরেছে। সে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ পৃথিবীজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস এলেই কেবল আমাদের চেতনাবোধ জাগ্রত হয়। শহীদ মিনার ধোয়ামোছা, শহীদ মিনারে প্রভাতফেরির অনুষ্ঠান, গান গাওয়া, সরকারি-বেসরকারি নানা মাত্রিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমেই আমরা একুশকে স্মরণ করি। একুশ আসে, একুশ যায়। আজ ৫৫ বছর হলো আমাদের অর্জিত অমর একুশে। একুশের চেতনা কি বছরের বাকি ১১ মাস আমাদের মাঝে জাগ্রত থাকে­ এ প্রশ্ন অনেকের মনেই উদয় হয়। সর্বস্তরে মাতৃভাষার চর্চা এখনো কাগুজেই রয়ে গেছে, দেশের সব শিশুকে আমরা মাতৃভাষা শিক্ষা দিতে পারিনি।
পাকিস্তানিদের মতো অনেক বাঙালি মুসলমান ও আলেম-ওলামা-ইমাম আমাদের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি উদাসীন। আরবি-ফার্সি-উর্দু ভাষায় যত ধর্মগ্রন্থ লেখা হয়েছে, আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় ততটা নেই। এটি বাংলা ভাষাভাষী আলেম-ওলামাদের ব্যর্থতা। আমাদের অনেকের এ উপলব্ধি বোধ নেই যে, আরবি-ফার্সি ও উর্দু ভাষায় রচিত সিনেমার চেয়ে বাংলা ভাষায় রচিত নজরুলের হামদ ও নাত হাজার গুণ শ্রেয়। আমাদের ভাষাসৈনিক ও তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাতে আমরা ভুলে গেছি। আমরা যে বায়ান্নর রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে একাত্তরের স্বাধীনতা পেয়েছি­ সে কথাটিও আজ আর বোধ হয় মনে নেই। আমরা আশা করব, আমাদের ধর্ম-কর্মে, আচার-ব্যবহারে, অফিস-আদালতে তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাংলা প্রচলনের দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে এবারের একুশ বিশেষ ভূমিকা রাখবে।