• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

সুন্দর সময় যাপন

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৮  

বিয়ের পর বছর না পেরোতেই কেমন যেন বদলে যেতে শুরু করে শফিক। অফিস থেকে এসেই স্ত্রী মৌকে আর জিজ্ঞেস করে না, কিভাবে সারা দিন কাটাল। ফ্রেশ হয়ে টেলিভিশন বা স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিছু জিজ্ঞেস করলেও উত্তর দেয় হ্যাঁ, হুঁ বলে। সারা দিন বাসায় একা থাকে মৌ। স্বামীর এমন আচরণে বিষণ্নতা দানা বাঁধতে শুরু করে মৌয়ের মনে। তার প্রভাব পড়তে শুরু করে সংসারে।

ফারিয়ার অন্য কিছুর অভাব নেই। মা-বাবা দুজনই বড় চাকরি করেন। একমাত্র মেয়ে সে। মা-বাবাকে খুব কমই কাছে পায় সে। বাসায় ফিরেও তারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। বাবা এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসেন তো মা ঢুকে যান রান্নাঘরে। এমন নয় যে তারা ফারিয়ার খোঁজ নেন না। তাতে মন ভরে না ফারিয়ার। আরেকটু মনোযোগ আশা করে সে।

বইপড়ুয়া মিমের বন্ধুর অভাব নেই। সময় পেলেই বাইরে খেতে যায় বন্ধুরা মিলে। কিন্তু একটাই সমস্যা—খেতে গিয়েও স্মার্টফোনে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকে সবাই। অথচ মিমের ইচ্ছা করে বইয়ে পড়া চমত্কার গল্প সবাইকে শোনাতে। কিন্তু সবার মনোযোগ স্মার্টফোনেই।

এভাবেই কেটে যাচ্ছে। কাছাকাছি থেকেও সবাই যোজন যোজন দূরে। ফলও হচ্ছে ভয়ানক। সম্পর্কে ঘাটতি, পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব, কাউকে বুঝতে না চাওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে নিজেদের মধ্যে।

 

কোয়ালিটি টাইম

দিনের মধ্যে সব সময় যে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে হবে, বিষয়টা তেমন নয়। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়, হোক সেটা ১৫ মিনিট কিংবা আধাঘণ্টা, তা নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। তারপর সেই সময়টুকু প্রিয়জনের সঙ্গে সুন্দরভাবে যাপন করাটাই হচ্ছে কোয়ালিটি টাইম পাসিং। যে সময়টা শুধু দুজনের জন্য হতে পারে কিংবা যাদের নিয়ে আয়োজন, তাদের উপলক্ষ করে হতে পারে। সেখানে আর অন্য কিছু স্থান পাবে না। কোয়ালিটি টাইম এমন নয় যে একজন কথা বলছে, অন্যজন মোবাইলে কিছু দেখতে দেখতে হ্যাঁ, হুঁ করছে কিংবা টেলিভিশন দেখছে।

 

কেন প্রয়োজন কোয়ালিটি টাইম

মানুষ স্বভাবতই নিজেকে অন্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখাতে চায়, ভালোবাসে। কেউ যখন তাকে সেই জায়গাটা দেয়, তখন এটা তার মানসিক উন্নতির জন্য, আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। এটা যে কারো জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে একজন নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভাবতে শুরু করে। এটা শুধু যার সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটানো হচ্ছে তার জন্যই ফলদায়ক তা নয়। বরং এতে যে অপরকে সুন্দর সময় উপহার দিচ্ছে, তারও কাজে লাগে। অপরপক্ষ তাকেও নিজের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে শুরু করে। কোয়ালিটি সময় কাটানোর ফলে সম্পর্কের বন্ধন আরো মজবুত হয়। এতে একজন অন্যজনের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে বলে সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে সমাধানটাও বেরিয়ে আসে। অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে সহজেই বেঁচে থাকা যায়।

 

স্বামী-স্ত্রীর কোয়ালিটি টাইম

স্বামী-স্ত্রীর জন্য প্রতিদিনের সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্কের পুরোটা সময় ভালো কাটবে এমনটা নয়। দিনের মধ্যে আধাঘণ্টা সময় একে অন্যের জন্য হতে পারে কোয়ালিটি টাইম। এই সময়টায় দুজন অন্য সব কিছু থেকে বিরত হয়ে একসঙ্গে বসে চা পান করতে পারে। এই সময়ে তারা পরস্পরের সঙ্গে সারা দিনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে। দুজন দুজনকে ভালো কাজের জন্য, নতুন কোনো অর্জনের জন্য প্রশংসা করুন, উত্সাহ দিন। শুধু তা-ই নয়, এই সময়ে দুজন দুজনের কুশলাদি জিজ্ঞেস করতে পারেন। খোঁজখবর নিতে পারেন। অনেকেই হয়তো খাবার টেবিলেই প্রয়োজনীয় কথাগুলো সেরে নেন। কিন্তু এর চেয়ে একচিলতে বারান্দায় একমগ কফি হাতে দুজনের মুখোমুখি বসে কথা বলা সবচেয়ে ভালো ফল এনে দেয়। মাঝে মাঝে একসঙ্গে আত্মীয়-স্বজনের বাসা বা কোথাও ঘুরতে যান। যার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, তার প্রতি আপনার মনোযোগ এবং আগ্রহ যে অক্ষুণ্ন আছে, সেটা আপনার কথায় ও আচরণে প্রকাশ করুন।

সন্তান ও মা-বাবার কোয়ালিটি টাইম

সন্তানকে সুন্দর সময় উপহার দিতে হবে মা-বাবাকেই। প্রথম কথা, মা-বাবাকে সবার আগে সন্তানের একজন ভালো বন্ধু হতে হবে। যাতে সে নিজের সব কথা অকপটে মা-বাবাকে খুলে বলতে পারে। সন্তানের জন্য মা-বাবাকে আলাদা করে দিনের কিংবা রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় রাখতে হবে। এর মানে এই নয় যে শুধু সেই সময়টুকুই সন্তানের জন্য বরাদ্দ। অন্যান্য সময়ের পরও সন্তানকে একটু আলাদা সময় দিতে হবে তাকে আরো একটু গুরুত্ব দেওয়ার জন্য, সে যে পরিবার থেকে, মা-বাবার কাছ থেকে একটু বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে—এটা তাকে বুঝতে দিতে হবে। সন্তান ভালো রেজাল্ট করলে তাকে আলাদাভাবে প্রশংসা করুন। উপহার দিন। ছুটির দিন পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে বের হোন। তাকে নিয়ে পার্কে বেড়াতে যান। ফুল, পাখি ও গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন। এতে ওর বাইরের জগত্ সম্পর্কে ধারণা আরো পাকাপোক্ত হবে। আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। এতে করে পরিবারের সবার মধ্যে বন্ধনও আরো অটুট হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত নানা বিষয় থেকে সন্তানকে আগলে রাখা যাবে। 

 

বন্ধুদের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মানুষ সবচেয়ে বেশি কোয়ালিটি টাইম কাটায়। কিন্তু স্মার্টফোন এসে সেখানেও যেন বাগড়া বসিয়েছে। এখন বন্ধুরা একসঙ্গে হলে সেলফিবাজি আর ছবি তোলায়ই যেন কেটে যায় সময়। সেলফি, ছবি তোলা দোষের নয়। বরং এটা একপাশে রেখেই বন্ধুদের সঙ্গে গল্প-আড্ডায় সময়টাকে কোয়ালিটি টাইম পাসিংয়ে রূপ দেওয়া যেতে পারে। বন্ধুদের ভালো কাজের প্রশংসা করার পাশাপাশি তাদের সমস্যা, সম্ভাবনার কথা শোনাটাও কিন্তু কোয়ালিটি টাইমের মধ্যে পড়ে। এখন ফেসবুক খুললেই চোখে পড়ে—বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে খেতে যাচ্ছে, কোথাও ঘুরতে যাচ্ছে। এটাই কোয়ালিটি টাইম। একজন বন্ধুর সঙ্গে পাশাপাশি বসে মন খুলে গল্প করাটাও কোয়ালিটি টাইম যাপন বলে বিবেচিত। বন্ধুর জন্মদিনে তাকে উপহার দিয়ে চমকে দিন। কিংবা অতীতের সুন্দর কোনো মুহূর্তের কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন।

মডেল : শবনম ফারিয়া ও অপু; ছবি : শেখ হাসান