• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগে নিজের ঘর সামলাতে বললেন শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী ‘বিলাসিতা একটু কমিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে নজর দিন’ চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

ইসলামের বিধি-বিধানে মানবকল্যাণই মুখ্য

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

আল্লাহ তাআলা মানবজাতির জন্য যেসব ইসলামী বিধান প্রণয়ন করেছেন, তা উভয় জগতে কল্যাণের বার্তা সুনিশ্চিত করে। ইসলামের বিধান পালনে ব্যক্তি যেমন পরকালে চিরস্থায়ী সুখের নীড়ে থাকবে, তেমনি দুনিয়ায়ও পাবে সর্বাধিক মঙ্গল। ইসলাম সব বিষয়ে মানুষের কল্যাণ অবধারিত করেছে। কল্যাণ নিশ্চিত করে না, ইসলাম ধর্মে এমন কোনো বিধি-বিধান মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সব বিধি-বিধানেই আছে কল্যাণ।

ইসলামী শরিয়াহর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, সমাজে কল্যাণ বা ফালাহ প্রতিষ্ঠা এবং অকল্যাণ প্রতিরোধ করা। মানবতার কল্যাণ সাধন করা হচ্ছে শরিয়াহর উদ্দেশ্য। শরিয়াহর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইমাম গাজ্জালী বলেন, শরিয়াহর গূঢ় উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণের কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে তাদের আকিদা বিশ্বাস, জীবন, বুদ্ধিবৃত্তি, সন্তান-সন্ততি ও সম্পদের সংরক্ষণ করা। যা কিছু এই পাঁচ বিষয় সংরক্ষণের নিশ্চয়তা বিধান করে তাই জনস্বার্থ বলে গণ্য এবং বিষয়টি কাম্য। ইবনুল কাইয়ুম বলেন, ‘শরিয়াহর ভিত্তি হচ্ছে, মানুষের প্রজ্ঞা এবং দুনিয়া ও আখিরাতে জনগণের কল্যাণ সাধন। আর কল্যাণ নিহিত রয়েছে সার্বিক আদল, দয়া-মমতা, কল্যাণকামিতা ও প্রজ্ঞার মধ্যে।’

ইসলামী শরিয়াহ আল্লাহ প্রদত্ত। এটি গোটা বিশ্ব মানবতার জন্য। ইসলামী শরিয়াহ প্রগতিশীল। কালের আবর্তনে উদ্ভূত সব সমস্যা সমাধানের জন্য কোরআন ও সুন্নাহভিত্তিক চিন্তা-গবেষণার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস—এই চারটি পদ্ধতি হলো ইসলামী শরিয়াহর মৌলিক উৎস।

ইসলামী শরিয়াহ পালনে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ—এ কল্যাণ সুবিদিত। ইসলামের শাশ্বত সৌন্দর্য মানুষের মধ্যে স্পষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানুষের যাপিত জীবনে সমস্যা এলে সেখানে প্রতিদিনই সমাধান নিয়ে হাজির হচ্ছে ইসলাম। এখানে ইসলামী শরিয়াহর ইহকালীন কল্যাণের কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো—রাসুল (সা.) ১৫০০ বছর আগে বলেছেন, ‘মা-বাবা তোমার জান্নাত। মা-বাবাই তোমার দোজখ।’ (ইবনে মাজাহ : ৩৬৬২)

অজু ও গোসলের বিধান দেওয়া হয়েছে সালাত ও তাওয়াফের কাজ সম্পাদনের জন্য। অনুসন্ধানে দেখা যায়, অজু ও গোসল মানুষকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। মানুষের ত্বক ভালো রাখে। শরীর ফুরফুরে করে। মনে প্রশান্তি আসে। জীবন পরিচালনায় গতির সঞ্চার হয়। এবং এই অজুর মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন সভ্য মুসলিম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

জামাতবদ্ধ নামাজের বিধান দেওয়া হয়েছে মহান আল্লাহর স্মরণকে জাগরূক করার জন্য। মুসলমানদের পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধনে উন্নতির জন্য। পরস্পরের ভালোবাসা বৃদ্ধির জন্য। মুসাফাহ, মুআনাকাহ আর প্রেমময় আলাপনে সুন্দর সম্পর্ক জিইয়ে রাখার জন্য। ঈমান আকিদাকে মজবুত ও প্রচার করার জন্য। এবং ইবাদতকে বিশুদ্ধ পন্থায় আদায়ের জন্য।

নামাজের উদ্দেশ্যে আজানের বিধান এসেছে ইবাদতের সময় হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার জন্য। এবং মানুষকে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি একত্রিত হওয়ার জন্য। আজান হচ্ছে, মানুষের বাস্তব জীবনে ইসলামের নীতি ও আদর্শ প্রচারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আজান ইসলামের মৌলিক সংস্কৃতি। ইসলামের বড়ত্বের ঘোষণার নিয়মিত রুটিন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের বিধান দেওয়া হয়েছে আল্লাহর ইবাদত পালনের জন্য। স্থির আদর্শ ও আনুগত্যের ওপর নিজেকে অভ্যস্ত করার নিমিত্তে যথাসময়ে উপস্থিতির জানান দেওয়া। অলসতা ঝেড়ে ফেলে সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার অনুসারী হওয়ার শিক্ষা নেওয়া। নামাজ মানুষকে অন্যায় ও পাপাচার থেকে বিরত রাখে। নামাজে মানুষের শারীরিক ব্যায়াম হয়। দেহ সুষ্ঠু ও মন সুস্থ থাকে। জীবনের নানাবিধ কুচিন্তা ও দুশ্চিন্তা কেটে যায়। জীবনে আসে সচ্ছলতা ও পবিত্রতা।

শূকর, মৃতদেহ ও রক্তের মতো অপবিত্র ও নিকৃষ্ট বস্তুগুলো মুসলমানদের ওপর হারাম করার পেছনে প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য ও আদেশ পালন এবং শারীরিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক বিপর্যয় এবং ক্ষতি পরিহার। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, এসব হারাম ও নিকৃষ্ট বস্তু মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মানুষের জীবনকে ধ্বংস ও ভয়ংকর বিপদে নিপতিত করে। (Objectives of Shariah by sulaiman hussain-07)

ইসলামী শরিয়াহ মানুষকে বিবাহে উৎসাহিত করেছে। এবং বলেছে বেশি বাচ্চা প্রসব করে এমন নারী বিবাহ করার জন্য। ভ্রূণ ও মানুষ হত্যা করেছে হারাম। অকারণে পরিবার পরিকল্পনা কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। চিরতরে বাচ্চা নেওয়া বন্ধকে করেছে হারাম। প্রকৃত মুসলমানরা ইসলামের নির্দেশ মেনে জনসংখ্যায় অধিক শক্তিশালী। পক্ষান্তরে ভিন্ন চিন্তার মানুষেরা পরিবার পরিকল্পনা করে আজ বিপাকে পড়েছে। তাদের দেশের জনসংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। অনেক দেশের সরকার, শিশু-কিশোরদের জন্য সরকারি ভাতা পর্যন্ত জারি করেছে। তার পরও জনসংখ্যা বাড়ছে না। ইসলাম বরাবরই সভ্যতা ও পবিত্র ধর্ম। এর বিধানও মানুষের জন্য কল্যাণকর। ইসলামী শরিয়াহর প্রত্যেকটি বিধানেই মানবজাতির জন্য রয়েছে ইহকালীন কল্যাণ। বাস্তব জীবনে কল্যাণ সাধন করে না—এমন কোনো বিধান ইসলাম দেয়নি।