• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়লো আরও ৩ দিন সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি

৬৯ বছর আগে আজকের এই দিনে

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২০  

‘অপারেশন বারবারোসা’ পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। অর্থাৎ ২য় বিশ্বযুদ্ধের একটি অন্যতম ঘটনা। বিশ্বযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে হিটলার এবং স্ট্যালিনের মধ্যে ১৯৩৯ সালে একটি সমঝোতা বা অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কারণে চুক্তি ভেস্তে যায়। জার্মান হাইকমাণ্ড ১৯৪০ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাশিয়া আক্রমণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় এবং হিটলার সোভিয়েত রাশিয়া আক্রমণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। যা ‘অপারেশন বারবারোসা’ নামে পরিচিত।

১৯৪১ সালের আজকের এইদিনে অর্থাৎ ২২ জুন হিটলার অপারেশন বারবারোসা (German: Fall Barbarossa, literally "Case Barbarossa") নামে পরিচিত সোভিয়েত রাশিয়া অভিযান শুরু করেছিলেন। এই অভিযানে উনিশটি প্যানজার ডিভিশন (ট্যাংকের সমন্বয়ে বিশেষ বাহিনী), ৩ হাজার ট্যাংক, ২ হাজার ৫০০ বিমান এবং ৭ হাজার কামান অংশ গ্রহণ করে। সর্বমোট ৩৭ লাখ সৈনিকের সাথে ৬ লাখ মোটরযান এবং ৬-৭ লাখ ঘোড়া ব্যবহার হয়েছিল এই অভিযানে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে বড় এক ফ্রন্টের সৃষ্টি হয়েছিল। 

১৯৪১ সালের ২২ জুন ভোর ৪টায় প্রথম জার্মান ট্যাংক সোভিয়েত সীমান্তে প্রবেশ করে। দ্রুত ও ক্ষীপ্রতার সাথে আক্রমণ সেই সাথে শত্রুকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়ার মাধ্যমে সেই অভিযানের শুরুতে জার্মানরা বিপুল সাফল্য অর্জন করে। ফিল্ড মার্শাল ওয়ালদার ভন ব্রসচিতস, ফিল্ড মার্শাল ফন বুক, জেনারেল গুডারিয়েন অপারেশন বারবারোসার নেতৃত্ব দেন। অভিজ্ঞ জার্মান জেনারেলদের দৃঢ়তা ও প্যানজার ডিভিশনের ট্যাংকের সামনে সোভিয়েত ট্যাংক ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা মুখ থুবড়ে পড়ে।

পরবর্তীতে বিপুল আত্মত্যাগ আর প্রাথমিক ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সোভিয়েত বাহিনী ঘুরে দাঁড়ায়। জার্মান আক্রমণ ঠেকাতে শিক্ষানবিশ ক্যাডেটদেরকেও সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গোয়েন্দাদের উপর্যুপরি সতর্কবার্তা ও সামরিক বিশ্লেষকদের হুশিয়ারি সত্ত্বেও স্ট্যালিনের বিশ্বাস ছিল যে, জার্মানরা এতো দ্রুত আক্রমণ করবে না। যে কারণে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছিল।

এদিকে, প্রাথমিকভাবে ব্যাপক সফলতার পর জার্মান জেনারেলরা সরাসরি মস্কোতে সর্বাত্মক আক্রমণের পরিকল্পনা করলেও হিটলার তাতে দ্বিমত করেন। ফলে স্ট্যালিনগ্রাদসহ অন্যান্য যুদ্ধে জার্মানদের সময় ও শক্তিক্ষয় হয় এবং সোভিয়েত বাহিনী  মস্কোর প্রতিরক্ষা মজবুত করতে আরো সময় পেয়ে যান।

পরবর্তীতে প্রচণ্ড শীত ও সোভিয়েত বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে মস্কো অভিযান ব্যর্থ হয়। জার্মান বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের পরাজয়ে এটি বিশাল ভূমিকা রেখেছিল। সবার আগে বার্লিনে সোভিয়েত বাহিনীই প্রবেশ করেছিল।

অপারেশন বারবারোসা শুরুর ঠিক ১২৯ বছর ১ দিন আগে নেপোলিয়ন বোনাপার্টও রাশিয়া আক্রমণ করেছিলেন। সে সময় জার্মান ও ফ্রান্স একযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। তিনিও যেমন সেই অভিযানে সফল হতে পারেন নি, একইভাবে হিটলারের রাশিয়া অভিযানও ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছিলো।

অপারেশন বারবারোসার দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষে জার্মান বাহিনীর ১০ লক্ষাধিক সদস্য প্রাণ হারান। অন্যদিকে সোভিয়েত বাহিনীর প্রায় ৫০ লক্ষ সদস্যকে জীবন দিতে হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় আড়াই কোটি বেসামরিক মানুষ। সেইসাথে পূর্ব ইউরোপের প্রায় সকল দেশের অবিকাঠামো বলতে গেলে ধ্বংস হয়ে যায়। উভয় দেশেই ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসে। দেখা দেয় মানবিক বিপর্জয়। পরবর্তীতে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বেশ ক’জন জার্মান জেনারেলের নুরেমবার্গ আদালতে বিচার হয়েছিল।

এদিকে, অপারেশন বারবারোসা নিয়ে বহু মুভি ও ডকুমেন্টারি তৈরী হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- The north star, The battle of russia, Fortress of war, Enemy at the gates, Greatest Tank battles-সহ আরো অসংখ্য মুভি। সিনেমার রুপালি পর্দায় দেখা যুদ্ধ বাস্তবের ভয়াবহতা সম্পর্কে কমই ধারণা দিতে পারে। পৃথিবীর বুকে এমন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ যাতে আর না ঘটে সেটাই প্রত্যাশা।