• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতার আমিরের বৈঠক ঢাকা সফরে কাতারের আমির, হতে পারে ১১ চুক্তি-সমঝোতা জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে: রাষ্ট্রপতি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশুপালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের তাগিদ জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই বাংলাদেশ আরও উন্নত হতো মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী আজ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

যেসব কারণে ব্যবসায় বরকত কমে যায়

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২১  

ব্যবসার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'তোমরা ব্যবসা করো, কেননা রিজিকের ১০ ভাগের ৯ ভাগই রয়েছে ব্যবসায়।' শুধু তা-ই নয়, যদি কোনো ব্যক্তি (হালাল জীবিকা) অন্বেষণ করতে গিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করে দেয় তাহলে সে শহিদ হিসেবে পরিগণিত হবে। এত সুন্দর ঘোষণার পরও ব্যবসায় কেন বরকত কমে যাবে? তাহলে কি হাদিসের এসব ঘোষণা অর্থহীন?

না, হাদিদের এসব ঘোষণা মোটেই অর্থহীন নয়। বরং যেভাবে ব্যবসা করার দিকনির্দেশনা এসেছে সেভাবে ব্যবসা না করলে ঐ ব্যবসায় বরকত পাবে না। নিয়ম বহির্ভূত ব্যবসায় বরকত কমে যায়; হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এ কথাও বলেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। তাহলো-

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘(বেঁচাকেনায়) বেশি বেশি কসম খাওয়ায় মালের কাটতি (বিক্রি বেশি) হয়, কিন্তু (আল্লাহ তাতে) বরকত দূর করে দেয়। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ)

২. হজরত আবু কাতাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু  বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যে (বেঁচা-কেনায়) বেশি কসম খাওয়া থেকে বেঁচে থাকবে। এর কারণে (সাময়িক) পণ্য বিক্রি বেশি হলেও (পরিশেষে এ ব্যবসায়) বরকত কমে যায়।’ (মুসলিম, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, জামে, তারগিব)

৩. হজরত কয়স ইবনু আবু গরাযাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়ে আমাদের (ব্যবসায়ীদের) ‘সামাসিরাহ্’ (দালাল গোষ্ঠী) হিসেবে অভিহিত করা হতো। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছ দিয়ে যাবার সময় আমাদের ওই নামের চেয়ে আরো উত্তম ও সুন্দর নামে অভিহিত করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! ব্যবসাকার্যে অনর্থক ও নিষ্প্রয়োজন কসম কাটা হয়ে থাকে। তাই তোমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষভাবে দান-সাদকাও করবে।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)

৪. হজরত উবায়দ ইবনু রিফাআহ তাঁর বাবার মাধ্যমে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে ব্যবসায়ীগণ বদকাররূপে উপস্থিত হবেন। অবশ্য যারা মুত্তাক্বি, পরহেজগার, নেককার ও সত্যবাদী হবেন তারা এরূপ হবেন না।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

মনে রাখতে হবে

ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনোভাবে কসম করা যাবে না। যদি কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিংবা পণ্য কেনা-বেচায় বেশি বেশি কসম করে তবে তার ব্যবসায় বরকত হয় না। বরং বিক্রি বেশি হলেও তাতে বরকত কমে যায়।

তাই ব্যবসা করতে হবে সততা ও আমানতদারিতার সঙ্গে। তবেই রয়েছে উত্তম প্রতিফল। যেভাবে হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন-

১. হজরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(যারা) সত্যবাদী, আমানতদার ব্যবসায়ী (কেয়ামতের দিন তারা) নবি, সিদ্দিক ও শহিদদের দলে থাকবেন। (তিরমিজি, দারাকুত্বনি)

২. হজরত হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের আগের উম্মাতের এক লোকের কাছে মৃত্যুর মালাক (ফেরেশতা) তার রূহ কবজ করার জন্য উপস্থিত হলেন। ওই লোককে জিজ্ঞাসা করা হলো, তুমি কি কোনো বিশেষ নেক আমল করেছো? লোকটি বললো, আমার স্মরণ নেই। লোকটিকে বলা হলো, তুমি চিন্তা করো। এরপর লোকটি বললো, একটি কাজ ছাড়া এমন কোনো ভালো কাজের কথা আমার স্মরণে আসে না। আর তাহলো-

‘দুনিয়ার জীবনে আমি লোকেদের সঙ্গে ব্যবসা করতাম, ব্যবসায়ী আদান প্রদানের ক্ষেত্রে আমি লোকেদের সাথে সহানুভূতিশীল থাকতাম। আমার দেনাদার ধনী লোক হলেও আমি তাকে সময় দান করতাম, আর দেনাদার গরীব-লোক হলে আমি তাকে আমার পাওনা মাফ করে দিতাম। এ (নেক) আমলের কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন।’ (বুখারি, মুসলিম)

হাদিসের বর্ণনাগুলোর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হালাল উপার্জনের জন্য হালাল ব্যবসার বিকল্প নেই। আর ব্যবসায় বরকতের জন্য কসম করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। কেননা শুধু ব্যবসায় রয়েছে প্রতিটি মানুষের রিজিকের ১০ ভাগের নয় ভাগ। (কানজুল উম্মাল)

আবার হালাল জীবিকা উপার্জনের জন্য হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যদি কেউ জীবন উৎসর্গ করে দেয় তবে সে শাহাদাতের মর্যাদায় ভূষিত হবে। (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ব্যবসা-বাণিজ্যে বেশি বিক্রির আশায় কসম না করে বৈধ পন্থায় ব্যবসা বাণিজ্য করা। তাতে বিক্রি অল্প হলেও থাকবে বরকত। এর ব্যতিক্রম হলেই ব্যবসায় বরকত থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে ব্যবসা-বাণিজ্য করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।