• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ এআইকে স্বাগত জানায় তবে অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে ছেলেরা কেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশ প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার যত ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা পিছিয়ে, কারণ খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর জলাধার ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণে প্রকৌশলীদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান যে পরিকল্পনা হউক, সেটা পরিবেশবান্ধব হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আল্লাহর ক্ষমা লাভে অগ্রগামী যারা

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২০  

আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও পুরস্কার লাভ মুমিন জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভেতর যাকে খুশি ক্ষমা করেন। ক্ষমা ও পুরস্কার প্রদানে তিনি স্বাধীন। কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় ক্ষমা লাভে অগ্রগামী বান্দার উল্লেখ পাওয়া যায়। সুরা আহজাবে আল্লাহ বান্দার এমন ১০টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন, যা তাঁর ক্ষমা ও পুরস্কার লাভে সহায়ক। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আত্মসমর্পণকারী পুরুষ ও আত্মসমর্পণকারী নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজা পালনকারী পুরুষ ও রোজা পালনকারী নারী, লজ্জাস্থান হেফাজতকারী পুরুষ ও লজ্জাস্থান হেফাজতকারী নারী, বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণকারী পুরুষ ও নারী—এদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৩৫)

আয়াত নাজিলের পরিপ্রেক্ষিত

উম্মে সালমা (রা.) একবার মহানবী (সা.)-এর কাছে অনুযোগ করে বলেন, কোরআনে পুরুষদের কথা যেভাবে এসেছে নারীদের কথা সেভাবে আসে না কেন? তার এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ সুরা আহজাবের উল্লিখিত আয়াত অবতীর্ণ করেন। (জামিউল মাসানিদ, হাদিস : ৭৭০৭)

১০ শ্রেণির মানুষ ক্ষমা লাভে অগ্রগামী

আলোচ্য আয়াতে উল্লিখিত ১০টি বিশেষ গুণের ব্যাখ্যা নিম্নে তুলে ধরা হলো—

এক. আত্মসমর্পণকারী : যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করে, তার আদেশ ও নিষেধ মান্য করে—সংশয়মুক্ত হয়ে সন্তুষ্টি ও পূর্ণ আনুগত্যের সঙ্গে। আল্লাহর আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে তার কোনো আপত্তি থাকে না। কেননা সে বিশ্বাসে আল্লাহর আনুগত্যেই রয়েছে মানুষের পার্থিব ও অপার্থিব কল্যাণ।

দুই. মুমিন বা বিশ্বাসী : যারা আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও রাসুলের আনীত জীবনবিধানে বিশ্বাস করে। ঈমানের তিনটি স্তর অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কাজে পরিণত করা। ঈমান মানুষের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। পৃথিবীতে আল্লাহর অনুগত সত্জীবন ঈমানের দাবি। সুতরাং কেউ যদি জীবনে পাপাচার ত্যাগ করতে না পারে তবে তার ঈমানের দাবি যথাযথ নয়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘গ্রাম্য লোকেরা বলে, আমরা ঈমান এনেছি। বলুন! তোমরা ঈমানও আনোনি, বরং তোমরা বলো আমরা আত্মসমর্পণ করেছি। ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি।’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১৪)

তিন. অনুগত : অনুগত দ্বারা উদ্দেশ্য আল্লাহর আনুগত্য ও প্রার্থনায় যারা প্রশান্তি লাভ করে এবং যারা এ ব্যাপারে স্থির ও দৃঢ়চিত্ত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বরং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব তার একান্ত অনুগত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১১৬)

চার. সত্যবাদী : একজন মুমিন তার জীবনের সব কথা ও কাজে সততার পরিচয় দেবে। তার জীবনে মিথ্যার চর্চা থাকবে না। এমনকি হাসির ছলে মিথ্যা বলবে না। আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ঘরে বসা ছিলেন। আমার মা আমাকে ডেকে বললেন, এসো আমি তোমাকে দেব। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘তুমি তাকে কী দেওয়ার ইচ্ছে করেছ? মা বললেন, আমি তাকে খেজুর দেব। তখন তিনি বললেন, যদি তুমি তাকে কিছু না দিতে তবে তুমি মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হতে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৯১)

পাঁচ : ধৈর্যশীল : মুমিন বিপদ-আপদ, দুশ্চিন্তা, পাপ পরিহার ও আল্লাহর আনুগত্যের ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দেবে। ধৈর্য মানুষের অন্তর আলোকিত করে এবং আল্লাহর সঙ্গে তার সম্পর্ক দৃঢ় করে। আল্লাহ ধৈর্যশীল বান্দাকে পছন্দ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন তাদের বিপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৬)

ছয়. বিনয়ী : যার আচার-আচরণ, কথা ও কাজে বিনয় প্রকাশ পায়, মূলত সে আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে এবং পরকালের চিন্তা তাকে অহংকার ও দম্ভ প্রকাশ করতে দেয় না।

সাত. দানশীল : অসহায় মানুষের জন্য যার অন্তর বিগলিত এবং যে তাদের প্রতি অনুগ্রহশীল। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সে তার সহায়-সম্পদ ব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করে না।

আট. রোজাদার : যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাঁর নির্দেশ মতে নির্ধারিত সময়ে বৈধ পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ পরিহার করে চলে। রোজা মানুষকে পাপ থেকে বিরত রাখে, তার মাধ্যমে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আল্লাহভীতি অর্জিত হয়। রোজার প্রতিদান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত।

নয়.  লজ্জাস্থান হেফাজতকারী : যারা অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় নিজের জৈবিক চাহিদা পূর্ণ করে না এবং যাদের দেহভঙ্গিতেও অশালীন ও অশ্লীলতা প্রকাশ পায় না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা নিজেদের যৌনাঙ্গ সংযত রাখে, নিজের স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসীরা ছাড়া; এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। কেউ এদের ছাড়া অন্যদের কামনা করলে তারা হবে সীমা লঙ্ঘনকারী।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৫-৭)

দশ. আল্লাহকে স্মরণকারী : যে আল্লাহর স্মরণ ও ভালোবাসা দ্বারা নিজের অন্তর সজীব রাখে। আল্লাহর ইবাদত, জিকির, তিলাওয়াত, তাসবিহ পাঠ যার কাছে পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততির চেয়ে প্রিয় হয়। যে শোয়া, বসা ও চলন্ত অবস্থায় আল্লাহর জিকির ও তাসবিহ পাঠ করে।